প্রতি বছরই পূর্বাঞ্চলসহ ট্রেনের যাত্রীদের ইফতার ও সেহরির খাবার দেওয়া হয় বিভিন্ন ক্যাটারিং সার্ভিসের মাধ্যমে। সোনার বাংলা, গোধুলী, তূর্নানিশিতা ও সূবর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনসহ বিভিন্ন ট্রেনে এসব খাবার সরবরাহে মূল্য নির্ধারিত রয়েছে। তবে এবার অন্য ট্রেনের তুলনায় সোনার বাংলায় খাবারের দাম যেমন বেশি, ঠিক তেমনি রয়েছে নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ। খাবারের দাম বিবেচনা করে মানটা আরো বেশি ভাল করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সোনার বাংলাসহ বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রীরা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পর্যটন করপোরেশন পরিচালিত সোনার বাংলা ট্রেনে টিকেটের দামের সাথে খাবারের দাম ধরা হয়েছে ২০০ টাকা। ক্যাটারিং সার্ভিসে ইফতারের দাম রয়েছে বিভিন্ন ট্রেনে ১০০ টাকা এবং সেহরির দাম ধরা হয়েছে ১৬০ টাকা। তবে গতবারের তুলনায় এবার দাম তেমন বাড়নো হয়নি।
পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্য কর্মকর্তা (সিসিএম) এসএম মুরাদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ট্রেন যাত্রীদের সেবায় রেলওয়ে প্রশাসন সবসময় কাজ করে যাচ্ছেন। এবারের রোজায় ট্রেন যাত্রীদের ইফতার ও সেহরির খাবার সরবরাহে কোন প্রকার ক্রুটি করা হচ্ছে না। খাবার ছাড়া যাত্রীদের সেবার মানও বৃদ্ধি করেছে। এতে বিশেষ করে যাত্রী সেবা নিশ্চিতে রেলমন্ত্রীসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কঠোর নজরদারি ও মনিটরিং করছেন বলে জানান তিনি।
ওসমান আজিজ নামের একজন নিয়মিত ট্রেন যাত্রী বলেন, সোনার বাংলা ট্রেনের খাবারগুলো একেবারেই নিম্নমানের খাবার। এসব খাবার নিজেদের চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবেন না। ঢাকা থেকে আসার সময় যেসব খাবার দেয়া হয়েছে, দামের তুলনায় অনেক বেশী। ২০০ টাকার মধ্যে দেওয়া হয়েছে একটি জুস, একটি বালুসাই মিস্টি, এক পিস কেক এবং একটি আপেল। তাছাড়া এসব খাবার মনে হয়েছে আগের এবং নিম্নমানের। এতে খাবারের দাম কমানো এবং অন্তত রোজার মধ্যে একটু ভালো খাবার দিলে যাত্রীরা রোজা ও সেহরি খেতে পারবেন ভালো করে।
পর্যটন করপোরেশনের ম্যানেজার সাইফুর রহমান বলেন, সোনার বাংলা ট্রেনের ভাড়ার সাথে খাবার নির্ধারিত আছে। খাবারের দাম রয়েছে ২০০ টাকা। এ টাকার সমপরিমাণ ইফতার ও সেহরিতে খেতে পারবেন। এখানে কোন নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হয় না। যেভাবে ম্যানু দেওয়া আছে, সেভাবেই খাবার সরবরাহ করা হয়।
তিনি বলেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসার সময় খাবারের বিষয়টি আরো একটু বিবেচনা করা দরকার। তবে রেলের সাথে যে রকম চুক্তি সেভাবেই খাবারসহ নানাবিধ সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে।
অপর যাত্রী ফাহিম উদ্দিন নিলয় বলেন, 'গতবছর তূর্নায় ২২০ টাকা দিয়ে সেহেরী কিনেছিলাম। এক মুঠো ভাত, একটা মুরগীর রান, এক চামচ হলুদ পানি (স্বচ্ছ ডাল), আর এক চামচ সবজি আর একটা ছোট পানি। একশ টাকা ধরলেও কম হয়ে যায়। তারা কিভাবে দুইশ নেয় এইটাই মাথায় আসেনা। এবারও তাই নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজ্জাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এক সময় আমাদেরকে খাবারের তালিকা দেওয়া হতো। এখন দেওয়া হয় না। এতে মনে হয় বড় ধরণের গাফিলতি রয়েছে। তবে সোনার বাংলা ট্রেনে খাবার নিয়ে অনেক প্রশ্ন যাত্রীদের।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল