৭ এপ্রিল, ২০২০ ১৮:৫৩

করোনা: ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রামের খবর নিলেন প্রধানমন্ত্রী

\নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

করোনা: ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রামের খবর নিলেন প্রধানমন্ত্রী

বৈশ্বিক মহামারীর এই সময়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের মানুষের খবর নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

মঙ্গলবার সকালে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে গণভবন থেকে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে তিনি চট্টগ্রামের সামগ্রিক পরিস্থির খবর নেন। ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রামের সার্বিক অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পবিত্র শবে বরাত আসন্ন। এই শবে বরাতে চট্টগ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের প্রতি আহবান, তারা যেন ঘরে বসে নামাজ আদায় করেন এবং দোয়া করেন। এবারের শবে বরাতে আল্লাহ যেন লেখেন যে-করোনা থেকে আমরা মুক্তি পাই। আল্লাহ অন্তত বাংলাদেশটা যেন রক্ষা করেন, সবাই এই দোয়াটা করেন।’

চট্টগ্রামবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন যে-মক্কা শরীফ, মদিনা শরীফ এখন বন্ধ। সেখানে কারফিউ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মক্কা শরীফ, মদিনা শরীফেই যখন এ অবস্থা সেখানে মসজিদে গিয়ে অনেক লোক একসঙ্গে জমায়েত হওয়া-এটাতে কিন্তু সংক্রমণ হওয়ার একটা ভয় থাকে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী শবে বরাত রাতে সবাই যাতে ঘরে বসে ইবাদত করেন। কোনো মতেই যেন মসজিদে ভিড় না করে। আল্লাহকে যেকোনো জায়গা থেকেই ডাকা যায়। সবাই আল্লাহকে ডাকুন। এবারের শবে বরাতে আল্লাহ যেন লেখেন যে, করোনা থেকে মুক্তি পাই। সবাই সে দোয়াটা চাইবেন। সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমি এ আহ্বান জানাই। আল্লাহ অন্তত বাংলাদেশটা যেন রক্ষা করেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামে ১৬২ জনের টেস্ট করা হয়েছে। দুইজনের করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। আর যাতে কারও এটা না হয়-সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। আমি চট্টগ্রামবাসীকে অনুরোধ করবো-এখানে প্রবাসী যেহেতু একটু বেশি, তারা যেন আত্মীয়-স্বজনদের বলে দেয় এখন না আসার জন্য। আর বাইরে থেকে যারাই আসে, এসেছে-তাদের যেন ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলে। বিষয়টা বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।’

ভিডিও কনফারেন্সে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজে (বিআইটিআইডি) এখন পর্যন্ত ১৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুইজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। তারা চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘আপনার দেয়া ৩১টি নির্দেশনা চট্টগ্রামে যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে। আপনি বলেছেন-একজন লোকও ক্ষুধার্ত থাকবে না। সে লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ৭২ হাজার ৪৮৭টি পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। সার্বিক অবস্থা এবং ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম মনিটরিং করতে জেলা প্রশাসনে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখানে আসা ফোন কলের সূত্র ধরে প্রতিদিন ১৫০-২০০ মধ্যবিত্ত পরিবারে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তবে তাদের পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে। তাছাড়া করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আজাদ, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক প্রমুখ।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর