সারাবিশ্বের মতো দেশেও করোনাভাইরাসের প্রকোপ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের সংক্রমিত বিভিন্ন এলাকাগুলোতে ইতিমধ্যে করা হয়েছে লকডাউন। আবার সরকার থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকেই দিচ্ছেন ত্রাণসামগ্রীও।
চট্টগ্রামেও করোনা সংক্রমিত বিভিন্ন এলাকা লকডাউনের পাশাপাশি রয়েছে প্রশাসনের কড়া নজরদারি। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেও কাজ করছেন প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের মাঠে দেখা গেলেও এ সংকটে নেই বললেই চলে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির (এরশাদ) শীর্ষ নেতাদের।
সাংগঠনিকভাবে এমনিতেই মাঠেই তেমন ছিল না এ দলটি। এতে করোনা ইস্যুতেও দলের নেই কোন সাংগঠনিক কর্মসূচী এবং তৎপরতাও। এতো বড় বিপদের সময় রাজনৈতিক নেতারা পাশে না থাকায় তৃণমূলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
ক্ষুব্ধ হয়ে একাধিক নেতাকর্মী বলেন, নিজ দলের নেতাকর্মীদের পাশে নেই, সেখানে সাধারণ মানুষের মাঝে কি পাশে থাকবেন নেতারা। কিসের রাজনীতি। দলের নেতারা নিজেদের শোডাউন নিয়ে ব্যস্ত। নির্বাচন এলে, পদ-পদবী নেয়ার সময় হলে, নেতা-কর্মীদের মনে পড়ে।
নেতাকর্মীদের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে নানা কৌশলও করে থাকেন নেতারা। করোনায় সমস্যার মধ্যেও চট্টগ্রাম বা ঢাকাও কোন নেতাই খবর নেননি। ঢাকায় চট্টগ্রামের অনেক নেতা অছেন গুরুত্বপূর্ণ পদে। তাদেরও খবর নেই। এ দলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ বা জাতি কিভাবে উপকৃত হবে সেটা নিয়েই ভাবছি এখন।
চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দেশের মহামারীর এসময়ে চট্টগ্রাম জাপা উধাও হয়ে গেছে। সাধারণ নেতাকর্মীদের পাশেই নেই শীর্ষ নেতারা। শুধুই পদবী দখলে ব্যস্ত। নগর জাপার সভাপতি সোলায়মান শেঠ চট্টগ্রাম ছেড়ে খাগড়াছড়িতে গিয়ে বসে আছেন। তিনি (সোলায়মান শেঠ) নগরের সভাপতি হিসেবে পাশে নেই। নেতাকর্মীরা করোনার কারণে ব্যক্তিগতভাবে নানা সমস্যায় রয়েছেন। আরো অনেক নেতা আছেন তারাও কর্মীদের পাশে নেই। গরীব-অসহায় মানুষ তো দূরে থাক, কর্মীদের পাশেও নেই। এমন নেতার দরকার কি? তবে কেন্দ্রীয় নেতারা একটু সু-দৃষ্টি দিলেই গরীবসহ দলের নেতা-কর্মীরা কিছুটা হলেও এই দুঃসময়ে সহযোগিতা পেতে পারেন বলে জানান তিনি। তবে জাতীয় পার্টির মহানগর কমিটির সভাপতি ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা ইস্যুতে রাজনীতির মাঠে নেই নগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ, এয়াকুব আলী, জেলা শফিক আহমেদসহ উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি-সম্পাদকসহ চট্টগ্রামের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। শুধুই নির্বাচন আসলে এবং দলীয় পদ-পদবী প্রয়োজন হলে তখনই শোডাউন দিতে হঠাৎ দেখা যায় এসব নেতাদের। যাদে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই একটা কৌশল। চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক কমিটির শত শত নেতাকর্মী রয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই গরীব-মধ্যবিত্ত পরিবারের নেতাকর্মী। করোনা ভাইরাসের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই পার হতে চললেও নেই শীর্ষ নেতারা। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড এবং জেলার ১৪টি থানা মিলেই একাধিক নেতা-কর্মী রয়েছেন। করোনার দুঃসময়ে সাধারণ মানুষ নন শুধু, দলের তৃনমূলের কর্মীদেরও খবর নেই বললেই চলে। কিছুদিন আগেই সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন জাপা নেতা সোলায়মান আলম শেঠ। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে আবার নিজেই প্রত্যাহার করে নেন।
বিডি-প্রতিদিন/ তাফসীর আব্দুল্লাহ