শিরোনাম
২২ জানুয়ারি, ২০২১ ১৬:১৪
চসিক নির্বাচন

পরিকল্পিত নগর উন্নয়নে রেজাউলের ইশতেহার কাল

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

পরিকল্পিত নগর উন্নয়নে রেজাউলের ইশতেহার কাল

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের শেষ মুহুর্তের প্রচারণা চলছে প্রার্থীদের। একই সঙ্গে তৈরি হচ্ছে স্ব স্ব প্রার্থীদের নির্বাচনী ইশতেহারও। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর চসিক নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা হবে শনিবার। ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী রেজাউলের ইশতেহারে কি থাকছে, সেই বিষয়েও আলোচনা চলছে নগরবাসীর মধ্যে। পরিকল্পিত নগর উন্নয়নে ৫৭টি প্রস্তাবনাসহ নানাবিধ বিষয় গুরুত্ব দিয়েই প্রকাশ হতে পারে মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর ইশতেহার। তাছাড়া ‘স্বাস্থ্য-শিক্ষা-সংস্কৃতিসহ পরিকল্পিত সবুজ নয়নাভিরাম মহানগর’ গড়ার প্রত্যয়ে নগরবাসীর সেবক হিসেবে রেজাউলের এই ইশতেহার আসছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নগর বান্ধব’ হবে আমার নির্বাচনী ইশতেহার। শনিবার এই ইশতেহার প্রকাশ করা হবে। নাগরিক দায় এড়িয়ে পৃথিবীতে কোন বাসযোগ্য আধুনিক নগর গড়ে উঠেনি। শুধুমাত্র আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বা কর্তৃপক্ষীয় উদ্যোগে এককভাবে নিরাপদ ও বাসোপযোগী নগর বা জনপদ গড়া যায় না। এই সত্য আমাদের মানতেই হবে। তবে বিশ্বমানের সবার সম্মিলিত প্রয়াসে পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাবো বলে জানান তিনি।

দলীয় ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত করে জানা গেছে, চসিক সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ হতে যাচ্ছে শনিবার। এই ইশতেহারে উঠে আসছে চট্টগ্রাম পরিকল্পিত নগরী, যানজট, সন্ত্রাস ও শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ নানাবিধ দিক তুলে ধরেই তৈরি করা হচ্ছে এই নির্বাচনী ইশতেহার। এই ইশতেহারে যুক্ত নেই, এমন বিষয়গুলোও সম্মিলিত আলোচনার মাধ্যমে কাজ করা হবে।

আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচনী ইশতেহারের ৫৭ প্রস্তাবনার কিছু চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো। ১. চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক নগরী ও বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে শেখ হাসিনার সহযোগিতায় নিজের সকল মেধাশ্রম দিয়ে কাজ করব, ২. মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন ও বধ্যভূমি উদ্ধার, সংস্কার ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ, ৩. আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক ও তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা, মাদক, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালনে যুব জনগোষ্ঠীকে, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী, প্রতিনিধি, ধর্মীয়গুরু ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সমন্বয়ে কমিটি পরিচালনা।

৩. প্রতিটি এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক গোসল বা ধৌত করার স্থানের ব্যবস্থা করা, ৪. বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্প গ্রহণ, ৫. সিটি কর্পোরেশনের সেবা মূল্য ও বিভিন্ন বিল/খাজনা/হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু, ৬. ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম গঠন, ৭. নগরীর প্রত্যেক ওয়ার্ডে অভিযোগ বাক্স বসিয়ে ও সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পৃথক টিম গঠন ও সুষ্ঠু সমাধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া, ৮. বিদ্যমান পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র সমূহের সংস্কার, সংরক্ষণ ও উন্নয়নসহ সম্ভাব্যতা যাচাইপূর্বক নতুন পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা।

৯. পাহাড় সংরক্ষণ, সবুজ বনায়ন, কর্ণফুলী ও হালদা নদীর রক্ষায় উদ্যোগী ভ‚মিকা পালন, ১০. ভেজাল, ফরমালিন, মজুদদারি ঠেকাতে বাজার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শক্তিশালী করা, ১১. জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে নগরীকে মুক্ত করতে নিয়মিত নগরীর ড্রেন, নালা পরিষ্কার করা এবং ড্রেন,নালা থেকে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা আধুনিক করে উত্তোলিত ময়লা-আবর্জনা অপসারণ নিশ্চিত করা, ১২ সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যমান ডোর টু ডোর ময়লা সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যহত রাখা, ১৩. নগর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাসহ সেবা কেন্দ্রগুলোর মান উন্নত করার লক্ষ্যে আধুনিকায়ন করা, ১৪. নগরে শব্দ দূষণের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

১৫. সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহে শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ১৬. নগরীর যানজট নিয়ন্ত্রণ ও যোগযোগ ব্যবস্থা গতিশীল করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও ডিজিটালাইজ করা, ১৭. দীর্ঘস্থায়ী যান চলাচলের উপযোগী সড়ক নির্মাণ সংস্কার এবং প্রয়োজনে নতুন সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা, ১৮. অপরিকল্পিত রাস্তা খুরাখুরিসহ উন্নয়ন কাজে সমন্বয়হীনতার কারণে সৃষ্ট নাগরিক দুর্ভোগ নিরসনে বিদ্যুৎ, গ্যাস, টেলিফোন, ওয়াসা, সিডিএ প্রভৃতি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের সঙ্গে প্রতি মাসে একটি সমন্বয় সভা করা।

১৯. রাতেই নগরীর সড়কসমূহ নিরাপদ করার লক্ষ্যে ফ্লাইওভারসহ নগরীর সকল সড়ক শতভাগ আলোকায়ন করা, ২০. নিরাপদ রাস্তা পারাপার নিশ্চিতের লক্ষ্যে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহে আরো নতুন ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ করা, ২১. নগরীর সম্ভাব্য স্থানগুলোতে ওয়াকয়ে নির্মাণ করা, ২২. সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত বইমেলার ব্যাপ্তি আরো বৃদ্ধি করা, ২৩ নতুন করে কোনো হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি না করা, ২৪. স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য বাসস্থান নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা, ২৫. সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বাজারসমূহ প্রয়োজনীয় সংস্কারপূর্বক আধুনিকায়ন করা এবং প্রয়োজনে নতুন বাজার নির্মাণ করা।

২৬. স্বল্প খরচে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত মাল্টি পারপাস কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা, ২৭. হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, ২৮. ছিন্নমূল অসহায় মানুষদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা, ২৯. সকল গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা, ৩০. নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সম্পূর্ণ নগরীকে ভিজিল্যান্সের মাধ্যমে দেখাশোনা ও তদারকি করা, ৩১. ভেজালমুক্ত ও নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করাসহ ৫৭টি একাধিক প্রস্তাবনা ইশতেহারে থাকছে। 

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর