হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির বদলি হিসেবে কারাভোগ করা আলোচিত সেই মিনু বেগম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। গত ২৮ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ-ভাটিয়ারী লিংক রোডে ‘সড়ক দুর্ঘটনায়’ নিহত হন তিনি। পরে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে আনজুমান-এ মুফিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে তাকে দাফন করা হয়।
কিন্তু শনিবার রাতে জানা গেল অজ্ঞাতনামা লাশটি ছিল বিনা দোষে তিন বছর কারাভোগ করা মিনুর। এরপর এই মৃত্যু নিয়ে মেলতে থাকে ডাল-পালা।
সিএমপি’র বায়েজিদ জোনের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘দুর্ঘটনার সময় তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী ট্রাকচালক ছিলেন। তাদের ফোন পেয়ে পুলিশ গিয়ে মিনুকে উদ্ধার করে। মনে হয় না এ দুর্ঘটনার অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।’
কারাগার থেকে বের হতে মিনুকে সার্বিক সহায়তা করেন চট্টগ্রাম বারের আইনজীবি গোলাম মওলা মুরাদ। তিনি এ মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘মিনুর এ মৃত্যুকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছি না। তাই ঘটনাটি তদন্ত করার দাবি করছি।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তি পাওয়ার পর মিনু দুই সন্তানের জন্য বেঁচে থাকার কথা বলেছিল। অথচ তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলা হচ্ছে। বিষয়টা রহস্যজনক মনে হচ্ছে।’
মিনুর ভাই মোহাম্মদ রুবেল বলেন, ‘গত ২৭ তারিখ বাসা থেকে বের হন আমার বোন। সারা দিন এলাকার ঘুরে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলেন। সন্ধ্যা থেকে তার কোনো খোঁজ পাইনি। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছি। শনিবার সন্ধ্যায় বায়েজিদ থানার এক এসআই এসে তার ছবি দেখায়। তখন তাকে শনাক্ত করি। পরে জানানো হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে। আমি চাই ঘটনাটি যথাযথভাবে তদন্ত হোক।’
বায়েজিদ থানা পুলিশ জানায়, গত ২৮ জুন ভোরে বায়েজিদ লিং রোড থেকে মারাত্মক আহত অবস্থায় মিনুকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় স্থানীয় লোকজন তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন হিসেবে আখ্যা দেয়। পরে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই