বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা। ফারজানা আকতার (ছদ্মনাম) নামে এক তরুণী থানায় আসেন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করতে। ওই তরুণী থানায় আসার সাথে সাথে ‘সার্ভিস ডেলিভারি সেন্টার’র দায়িত্বরত কর্মকর্তা ভুক্তভোগী তরুণীকে প্রথম পানি এবং কফি দিয়ে অ্যাপায়ন করেন। অতপর শোনেন ভিকটিমের অভিযোগ।
অভিযোগ গ্রহণ করে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য ওই তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ডেস্কে। চিত্রটি বাইরের কোনো দেশের পুলিশ স্টেশনের মনে হলেও এমন পুলিশিং কার্যক্রম চালু করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)’র পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে এটি পাঁচলাইশ মডেল থানায় চালু করলেও পরবর্তীতে প্রত্যেক থানায় নতুন ধরনের এ পুলিশ কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে সিএমপি’র।
সিএমপি’র মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আরাফাতুল ইসলাম বলেন, ‘সেবার মান আরও বৃদ্ধির জন্য পাঁচলাইশ থানাকে ভিন্ন ধাপে সাজানো হয়েছে। চালু করা হয়েছে কিছু সার্ভিস। পরবর্তী সময়ে নগরীর সব থানা একই ধাচে সাজানো হবে।’
পাঁচলাইশ থানার ওসি জাহেদুল কবির বলেন, ‘সেবার মান বৃদ্ধির জন্য সিএমপি’র কমিশনার কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। ওনার নির্দেশ মতো ইউরোপের পুলিশ স্টেশনের ধাচে সাজানো হয়েছে পাঁচলাইশ থানাকে। একই সাথে সেবার মান বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।’
জানা যায়, বিভিন্ন দেশের পুলিশিং কার্যক্রমের মতো আরো জনবান্ধব করতে সিএমপি’তে নেওয়া হয়েছে অভিনব উদ্যোগ। এ উদ্যোগের পাইলট প্রকল্প হিসেবে পাঁচলাইশ থানাকে সাজানো হয়েছে ইউরোপ আমেরিকার পুলিশ স্টেশনের ধাচে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা কক্ষ তৈরি করা হয়েছে স্বচ্ছ কাচ দিয়ে। প্রত্যেক কর্মকর্তার জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা আলাদা ডেস্ক। যাতে প্রত্যেক জনের জন্য রয়েছে কম্পিউটার। আসামীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিজ্ঞানসম্মত হাজতখানা। তৈরি করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কর্নার, নারী ও শিশু ডেস্ক, প্রতিবন্ধী ডেস্ক।
থানায় সেবা গ্রহীতাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে সার্ভিস ভেলিভারি সেন্টার। এ সেন্টারে আসার সাথে সাথে সেবা গ্রহণকারীদের বোতলজাত পানি এবং কফি দিয়ে অ্যাপায়ন করা হয়। এরপর অভিযোগ শুনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়।
পাঁচলাইশ কমিউনিটি পুলিশিং সভাপতি আবু সায়েদ সেলিম বলেন, ‘পুলিশিং সেবার মান বৃদ্ধির জন্য পাঁচলাইশ থানা পুলিশ যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। সিএমপি’র প্রত্যেক থানার সেবা এভাবে হওয়া উচিত।’
সেবা গ্রহীতা ফারজানা আকতার (ছদ্মনাম) বলেন, ‘থানায় সেবা গ্রহণকারীদের পানি ও কফি দিয়ে অ্যাপায়ন, অতপর সেবা প্রদান এটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। দেশের প্রত্যেক থানার চিত্র এটাই হওয়া উচিত।
বিডি প্রতিদিন/এমআই