চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চলতি বছরের গত ১ জানুয়ারি থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে মোট আক্রান্ত হয় ১৯০ জন। এর মধ্যে গত ১ থেকে ২০ সেপ্টেম্বরেই আক্রান্ত হয়েছেন ১২১ জন। বাকি ৬৯ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত। তাছাড়া চলতি মাসেই মারা যান তিনজন। ফলে এই সেপ্টেম্বর মাসেই চোখ রাঙিয়েছে ডেঙ্গু।
চলতি মাসেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে। তবে অধিকাংশ রোগীই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হচ্ছেন। তৈরি হয়নি সংকটাপন্ন অবস্থা। চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের তিনটি মেডিসিন ওয়ার্ড এবং দুটি শিশু ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে গত জানুয়ারি মাসে ভর্তি হয় ৪ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, মার্চে ১ জন, এপ্রিলে ৩ জন, মে মাসে আক্রান্ত ছিল না, জুনে ২ জন, জুলাই মাসে ১৩ জন, আগস্টে ৪৩ জন এবং সেপ্টেম্বরে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয় ১২১ জন। এ মাসেই মারা যান তিনজন।
সর্বশেষ গতকাল বুধবারও একজন মারা যায়। চমেক হাসপাতালে বর্তমানে ২৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে তিনটি মেডিসিন ওয়ার্ডে ২৪ জন এবং দুটি শিশু ওয়ার্ডে ৪ জন। চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. আরাফাতুল আলম বলেন, বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা তৈরি, মানুষের অবহেলা-অসচেতনতার কারণে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। তাছাড়া অনেকে এখন জ্বর, পেট ব্যাথা, প্রেসার কম বেশি হওয়াসহ এসব বিষয়ে অবহেলা করে চিকিৎসকের কাছে যান না। ফলে ভেতরে ভেতরে ডেঙ্গুসহ নানা রোগ বাসা বাঁধে। তাই এসব ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। শরীরে কোনো সমস্যা দেখা দিলেই যেন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে।
চমেক হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক মোছা. ইনসাফি হান্না বলেন, প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন অনেকে। মেডিসিন ও শিশু বিভাগের মোট পাঁচটি ওয়ার্ডে বিশেষ সুবিধা দিয়ে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসক ও নার্সদের সেবায় আক্রান্ত রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরছেন। এ ব্যাপারে আমরা সব সময় সচেতনভাবেই চিকিৎসা ও সেবা প্রদান করে চলেছি।
চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে জ্বর হলেই ডেঙ্গুর বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। জ্বর সাধারণ মাত্রার অতিরিক্ত হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে জ্বরের সঙ্গে আরও কিছু উপসর্গ থাকতে পারে। এর মধ্যে আছে, তীব্র শরীর ব্যথা, চোখের চারপাশে এবং পেছনে ব্যথা, বমি বমি ভাব কিংবা বমি, পেটে ব্যথা, ক্ষুধামন্দা ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, স্বাদের পরিবর্তন এবং গায়ে লালচে ভাব। এ সময় জ্বরে আক্রান্ত বিলম্ব করার কোনো সুযোগ নেই।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক