৭ জুলাই, ২০২৩ ২১:০৭

চট্টগ্রামে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু, প্রজননের ৪৩৫টি স্পট চিহ্নিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু, প্রজননের ৪৩৫টি স্পট চিহ্নিত

ফাইল ছবি

চট্টগ্রামে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু। বছরের শুরুতে ১২৯ থাকলেও গত দুই মাসে তা বেড়েছে কয়েক গুণ। শুক্রবারও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ জন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এক জরিপ বলছে, নগরে মশা প্রজননের ৪৩৫ টি স্পট চিহ্নিত। দুই বছর আগেও নগরে মশা প্রজনন স্পট ছিল ৫৭টি। দুই বছরের ব্যবধানে তা এখন বেড়েছে ৮ গুণ। তবে চসিক মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিলেও তাতে আলোর মুখ দেখছে না।

তথ্য অনুযায়ী, নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের সবচেয়ে বেশি মশার প্রজনন স্পট রয়েছে মোহরা ওয়ার্ডে, এ ওয়ার্ডে ৫২টি স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও শুলকবহর ওয়ার্ডে ৩০ স্পট, পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডে ২৯টি ও দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ২৫ স্পটকে ঝুকিঁপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, জুন মাসে রেকর্ড ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। চলতি মাসের পাঁচ দিনেই ২২৩ জন আক্রান্ত ও তিনজন মারা গেছেন। দিন দিন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে ডেঙ্গু, এখনই যদি সঠিকভাবে মশার বিস্তার রোধ করা না হয় তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।

চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, মশার উপদ্রব কমাতে জনগণকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। ১০০ জনের টিম দিয়ে প্রতিদিন ১০টি ওয়ার্ডে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালানো হচ্ছে। মূলত এডিস মশা তো নালার দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে হয় না, স্বচ্ছ পানিতে হয়। তাই নগরবাসীকেই সচেতন হতে হবে।

চট্টগ্রাম জেলা কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদৌস বলেন, এখন যেভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে এটি এডিশ মশা জন্মানোর জন্য খুবই অনুকূল পরিবেশ। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে যেকোনো পাত্রে পানি জমে যেতে পারে আর তাতেই জীবনঘাতী এড়িশমশা জন্মাবে। সবার আগে আমাদের সচেতন হতে হবে। যেন প্রয়োজন ছাড়াও কোথাও পানি জমিয়ে না রাখি। পানি জমিয়ে রাখলেও তা যেন ঢেকে রাখা হয়। এছাড়াও নির্মাণাধীন ভবন, থানায় জব্দ করা পুরাতন গাড়ি, বাস স্ট্যান্ড এলাকায় পানি জমে থাকে। তাই এসব জায়গায় নজর দিতে হবে বেশি। এগুলো সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব হবে, যদিওবা আমরা জনগণ সচেতন না হয়।

এদিকে মশক নিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়রকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। উদ্বেগের কথা জানিয়ে পাশাপাশি রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালককেও (সংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ) ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি পাঠানো হয়। 

এদিকে দুই সপ্তাহ আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মশক নিধনে ক্রাশ পোগ্রাম শুরু করে। ক্রাশ পোগ্রাম শুরু করার পর থেকে বাড়তে থাকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতে চসিকের ক্রাশ পোগ্রাম নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। মশক নিধন ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও ভিন্নমত পোষণ করছে অনেকে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মশা নিধনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বরাদ্দ রেখেছে ৫ কোটি টাকা, যা বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের পাঁচ গুণ। গতবার মশা নিধনে ১ কোটি টাকা ব্যয় করেছে চসিক। এর মধ্যে শুধু মশার ওষুধ কেনায় ব্যয় দেখানো হয়েছে ৮০ লাখ টাকা।

 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর