২৫ মে, ২০২৪ ১৬:৪৭

চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর ঘাটতি পূরণ করবে পার্বত্য জেলা

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর ঘাটতি পূরণ করবে পার্বত্য জেলা

চট্টগ্রাম মহানগর ও ১৫ উপজেলায় এ বছর কোরবানীতে গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬৫টি। কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৮ লাখ ৫২ হাজার ২৫৯টি। এ বছর পশুর ঘাটতি রয়েছে ৩৩ হাজার ৪০৬টি। প্রতি বছর চট্টগ্রামে কোরবানিদাতা বাড়ার কারণে ঘাটতি থাকে পশুরও। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পার্শ্ববর্তী জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি থেকে পশু এনে ঘাটতি পূরণ করা হয়। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা পশু এনে চট্টগ্রামের বাজারে বিক্রি করে।

জানা যায়, চট্টগ্রামে এবার সম্ভাব্য কোরবানি পশুর চাহিদা ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬৫টি। এর মধ্যে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৭৫টি গরু, ৭১ হাজার ৩৬৫টি মহিষ, ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩টি ছাগল, ভেড়া ৫৮ হাজার ৬৯২ ও অন্যান্য পশু ৮৮টি। কিন্তু কোরবানির জন্য পশুর মজুদ হয়েছে ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯টি পশু। ফলে ৩৩ হাজার ৪০৬টি পশুর ঘাটতি রয়েছে। চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত হয়েছে দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে। উপজেলাটিতে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ৮২ হাজার ৮০৭টি। বিপরীতে কোরবানির পশুর চাহিদা ৭৯ হাজার ৬৩৮টি। চট্টগ্রামে প্রায় ১৪ হাজার ২৫৮টি মত পশুর খামার রয়েছে। পাশাপাশি অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য খামার। মীরসরাই, কর্ণফুলী, পটিয়া, সীতাকুণ্ড, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলার খামারগুলোতে কোরবানির জন্য বেশি পশু লালন-পালন করা হয়ে থাকে। ফলে কোরবানিতে বিদেশী পশুর প্রতি নির্ভরশীলতা কমেছে। ২০১৪ সালের পর থেকে বিদেশ থেকে গুরু আমদানি বন্ধ রয়েছে। দেশে উৎপাতি পশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকতা ডা. মো নজরুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় প্রচুর মানুষ পশু কোরবানি দেন। ফলে এই জেলায় প্রতি বছরই কোরবানির পশুর ঘাটতি থাকে। তবে চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখান থেকে চট্টগ্রামে পশু এনে চাহিদা পূরণ করা হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম কোরবানির পশুর বড় বাজার। প্রতি বছর দেশের উত্তরাঞ্চলের পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলা থেকে চট্টগ্রামে কোরবানির পশু আসে। সবমিলিয়ে আমরা মনে করছি পশু ঘাটতি খুব একটা সমস্যা হবে না।

তিনি জানান, এবারের কোরবানিতে চট্টগ্রাম জেলায় ১৫টি উপজেলা এবং চট্টগ্রাম শহরে কৃষকের খামারে মজুদ থাকা গবাদি পশুর মধ্যে কোরবানিযোগ্য ষাঁড় রয়েছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ২১১টি, বলদ ১ লাখ ৪০ হাজার ৩১০টি এবং গাভী রয়েছে ৩৭ হাজার ৮০৪টি। মোট গরুর সংখ্যা ৫ লাখ ২৬ হাজার ৩২৫টি। মহিষ রয়েছে ৭১ হাজার ৩৩৩টি। গরু এবং মহিষ মিলে মোট কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫৮টি। এছাড়া ছাগল এবং ভেড়া রয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪০৫টি। যার মধ্যে ছাগল ১ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪৩টি এবং ভেড়া ৫৮ হাজার ৬৬২টি রয়েছে।

বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতি বছর চট্টগ্রামে পশুর ঘাটতি থাকে। ফলে প্রতি বছরই স্থানীয়ভাবে পশু পালনের সংখ্যা বাড়ছে। তারমধ্যে ২০২৩ সালে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ছিল ৮ লাখ ৪২ হাজার ১৬৫, ২০২২ সালে ৮ লাখ ১৯ হাজার ৪৪২। ২০২১ সালে উৎপাদন হয়েছে ৭ লাখ ৫৫ হাজার পশু। ২০২০ সালে  ৬ লাখ ৮৯ হাজার। ২০১৯ সালে ৬ লাখ ১০ হাজার ২১৯টি গবাদি পশু উৎপাদিত হয়েছে। ২০১৮ সালে ৫ লাখ ৮১ হাজার ৬৩৪টি, ২০১৭ সালে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ১৬৩, ২০১৬ সালে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ১১৯ ও ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে ৩ লাখ ২০ হাজার গবাদি পশু উৎপাদন হয়েছে। ২০২১ সালে ৮ লাখ গবাদি পশুর চাহিদা থাকলেও ঘাটতি ছিল ৫২ হ্জাার ৬৬৬ পশু। তবে চার বছর আগের তুলনায় এ বছরে চাহিদা বেড়েছে ৭৬ হাজার ৭৬৫ পশুর, কিন্তু ঘাটতি রয়েছে মাত্র ৩৩ হাজার ৪০৬টি।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর