চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ১৬ থানার মধ্যে ১৫টি থানা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জায়গা সংকটের কারণে শুধুমাত্র চালু করা যাচ্ছে না পতেঙ্গা থানা। গত সোমবার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই পতেঙ্গাসহ কয়েকটি থানায় হামলা ও ভাংচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময়ে আত্মরক্ষার্থে নিরাপদ স্থানে চলে যায় পুলিশ সদস্যরা।
গত ৫ দিন ধরে থানাগুলোতে কোনো পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি দেখা যায়নি। তবে বিএনপি নেতারা বিভিন্ন থানা পাহারা দিয়ে নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।
শনিবার থেকে প্রায় সব থানায় স্বাভাবিকভাবে সচল হয়েছে থানা পুলিশের কার্যক্রম। সেবা দেওয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ।
সিএমপির বাকলিয়া থানার ওসি আফতাব হোসেন বলেন, আমরা থানা কার্যক্রম শুরু করেছি। পুলিশের মাঝে এখন আর কোনো আতঙ্ক নেই। আমরা মানুষকে সেবা দেওয়ার প্রস্তুত আছি। থানা পুলিশের সব ফোর্স আসছে, সবাই হাজির। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ মামলার জন্য আসেনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শনিবার সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানা পরিষ্কার করছেন শিক্ষার্থীরা। নগরীর স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী দলে দলে পুরো থানা প্রাঙ্গণ পরিষ্কারের কাজ করছেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা গাড়িতে তুলে আবর্জনা নিয়ে যায়। তাদের সহযোগিতা করতে দায়িত্বে আছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীদেরও দেখা গেছে থানা প্রাঙ্গণ পরিষ্কার কাজে। এসময় থানায় কোতোয়ালী থানার ওসি এসএম ওবায়দুল হকসহ থানার এসআই, এএসআই ও বেশ কয়েকজন কনস্টেবল থানায় উপস্থিত ছিলেন। এরআগে গত ৫ আগস্ট সোমবার থানায় হামলা চালিয়ে লুটপাট ও ভাঙচুর করে আগুনে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
এরআগে গত ৫ আগস্ট সোমবার সারাদেশে যখন থানায় থানায় হামলা, লুটপাট শুরু করে দূর্বৃত্তরা সে সময়ে সিএমপিরা পাঁচলাইশ থানা পাহারা দিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। ওইদিন সন্ধ্যায় থানায় দলে দলে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা থানা পাহারা দিতে আসেন। একই সময়ে পতেঙ্গা, চান্দগাঁও, হালিশহর কোতয়ালী, সদরঘাট, ইপিজেড থানাসহ বিভিন্ন থানা ঘেরাও ও দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে হামলা হয়৷ এছাড়া, মনসুরাবাদ পুলিশ লাইন্স ও জেলা পুলিশের ছোটপুল পুলিশ লাইন্সে হামলা হয়। কোথাও কোথাও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পাঁচলাইশ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, পুলিশ ও থানাসহ যখন সবদিকে দুর্বৃত্তরা হামলা, আক্রমণ করছে তখন বিএনপির নেতাকর্মীরা গিয়ে থানা পাহারা দিয়েছে। কারণ থানা পুলিশের সম্পদ নয় এটি জাতীয় সম্পদ, জনগণের টাকায় গড়ে তোলা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের বলা হয়েছে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তার দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল গড়ে তোলার জন্য থানায় হামলাসহ অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে। যার কারণে কোন অপশক্তি যেন জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।
সিএমপি সূত্র জানায়, সিএমপির ১৬ থানার মধ্যে সীমিত পরিসরে শুরু হয়েছে চান্দগাঁও, বায়েজিদ বোস্তামী, খুলশী, পাঁচলাইশ, সদরঘাট, চকবাজার, বাকলিয়া, পাহাড়তলী, আকবরশাহ, কর্ণফুলী, বন্দর, হালিশহর ও ডবলমুরিং থানা। থানা প্রাঙ্গনে শুরু হয়েছে কোতোয়ালী থানা পুলিশের কার্যক্রম এবং ইপিজেড থানার কার্যক্রম সীমিত পরিসরে নিউমুরিং পুলিশ ফাঁড়িতে শুরু হয়েছে। তবে পতেঙ্গা থানার কার্যক্রম সচল করার জন্য নতুন ভবন খোঁজা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম