চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) যুক্ত করা হবে আরও দশটি শয্যা। ইতোমধ্যে শয্যা স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। আগামী মাসে এগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। এর আগে চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি ৩০টি আইসিইউ শয্যা যোগ করা হয়েছিল।
চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে হাসপাতালে দুটি আইসিইউ ইউনিট আছে। এর মধ্যে চতুর্থ তলার ইউনিট-১ এ আছে ২০টি এবং নিচতলার ইউনিট-২ তে আছে ৩০টি শয্যা। প্রতি মাসে প্রায় ৩০০ সংকটাপন্ন রোগী এ বিভাগে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ রোগীই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেন। তবে আইসিইউতে প্রতিটি রোগীকে আনা হয় অত্যন্ত সংকটাপন্ন ও মুমূর্ষু অবস্থায়। হার্ট অ্যাটাক, ব্রেইন স্ট্রোক, বার্ন ইনজুরি, কিডনি ডায়ালাইসিস, ট্রমা, দুর্ঘটনার মাথায় আঘাত পাওয়া, নিউরোসার্জারি, গাইনোকোলোজি, কার্ডিওলজি, কার্ডিয়াক সার্জারিসহ ক্রিটিক্যাল রোগীদের জন্য আইসিইউর প্রয়োজন হয়।
চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, বর্তমানে দুটি ইউনিটে মোট ৫০টি আইসিইউ শয্যা আছে। এখন আরও দশটি শয্যা যুক্ত করা হবে। এখন শয্যাগুলো স্থাপনের প্রয়োজনীয় কাজ চলছে। আশা করি আগামী মাসে চালু করা হবে।
তিনি বলেন, হাসপাতালের আইসিইউতে রোগীদের আনা হয় একবারে সংকটাপন্ন অবস্থায়। তাই প্রতিটি রোগীকেই অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে সেবা প্রদান করা হয়। ভর্তিকৃত রোগীদের এন্টিবায়েটিক ও ইঞ্জেকশনসহ প্রায় সব ধরনের ওষুধ দেয়া হয়। আমাদের চেষ্টা থাকে সব রোগীকে সুস্থ করে তোলার।
জানা যায়, ১৯৬০ সালে মাত্র ১২০ শয্যা নিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয় চমেক হাসপাতালের। প্রথম দিকে হাসপাতালে পাঁচ শয্যার আইসিইউ চালু করা হয়। ২০০৫ সালে ১২ শয্যায় উন্নীত হয়। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ৮টি ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউ প্রদান করা হয়। ফলে আইসিইউ শয্যা হয় ২০টি। সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি ৩০টি আইসিইউ শয্যা যোগ করা হয়। বর্তমানে চমেক হাসপাতালে সাধারণ শয্যা আছে দুই হাজার ২২২টি। তবে আইসিইউ বিভাগে জনবল সংকট আছে। জনবল সংকট নিয়েই স্পর্শকাতর ও চিকিৎসায় অতিগুরুত্বপূর্ণ ইউনিটটি পরিচালনা করা হচ্ছে। তাছাড়া, প্রায় প্রতিদিনই সংকটাপন্ন রোগীর জন্য আইসিইউ শয্যার চাহিদা থাকে। আর্থিকভাবে সক্ষমরা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নিতে পারলেও অসহায়-গরীব ও খেটে খাওয়া মানুষদের চরমভাবে বিপাকে পড়তে হয়। এমন মানুষদের জন্য হাসপাতালের আইসিইউই একমাত্র ঠিকানা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল