বরিশাল সরকারী ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করতে যাওয়া এক অধ্যাপককে প্রকাশ্য রাস্তায় মারধরের মামলায় খালাস পেয়েছেন ছাত্রলীগের ৪ কর্মী। মামলার ৩ বছর পর গত বুধবার বরিশাল মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল ইসলাম মামলার রায়ে ৪ আসামিকে বেকসুর খালাস দেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন: ছাত্রলীগ কর্মী নিয়াজ মোর্শেদ সোহাগ ওরফে পাসপোর্ট সোহাগ, মো. সোহেল, মিরাজ ও জহিরুল ইসলাম। রায় ঘোষণার সময় এদের প্রত্যেকেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই আবু তাহের বলেন, ঘটনার শিকার অধ্যক্ষ শংকর চন্দ্র দত্ত আদালতে আসামীদের পক্ষে সাক্ষী দিয়েছেন। বিষয়টি সমঝোতা হওয়ায় সাক্ষীরা আসামীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করতে পারেনি। এ কারণে সকলে খালাস পেয়েছেন বলে মনে করেন ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু তাহের।
খালাসপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ কর্মী মো. সোহেল জানান, ঘটনার শিকার অধ্যক্ষ চন্দ্র দত্ত আদালতে দেয়া সাক্ষীতে ওই সময় তারা (আসামিরা) ছিলেন না বলে উল্লেখ করেছেন। অপর সাক্ষী পেট্রলপাম্প কর্মচারী সুন্দর আলীও তার সাক্ষীতে ৪ আসামীর কেউই জড়িত ছিলেন না বলে উল্লেখ করেছেন।
২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ননী গোপাল দাসকে খুলনা বিএল কলেজে বদলী প্রত্যাহারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ছাত্রলীগের একাংশ বিক্ষোভ করে।এই অবস্থায় অধ্যক্ষ অধ্যাপক শংকর চন্দ্র দত্ত বিএম কলেজে যোগ দিতে আসছে খবর পেয়ে কলেজের সামনের রাস্তায় বেঞ্চ ফেলে ও টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। অধ্যক্ষ শংকর চন্দ্র দত্ত কলেজ সংলগ্ন পেট্রলপাম্প এলাকায় পৌঁছলে কলেজের ছাত্র সংসদের আদলে গঠিত মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্রকর্ম পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা অধ্যক্ষ শংকর চন্দ্র দত্তের ওপর প্রকাশ্য রাস্তায় হামলা চালায়। তারা শত শত মানুষের উপস্থিতিতে শংকর চন্দ্রকে প্রকাশ্যে চড়-থাপ্পর, ঘুষি-লাথি দেয়। দৌড়ে পালিয়ে ওইদিন নিজেকে রক্ষা করে অধ্যক্ষ শংকর চন্দ্র।
দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচিত ওই ঘটনার পরদিন বরিশাল সিটির তৎকালীন মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শওকত হোসেন হিরণ মূল অপরাধীদের আড়াল করে তাদের কয়েক সহযোগীকে নিজ বাসায় ডেকে নিয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় সোর্পদ করে।
ওই ঘটনায় শংকর চন্দ্র দত্ত থানায় সাধারন ডায়েরী করেন। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় তিনি মামলা করতে না পাড়লেও থানার থানার এসআই আবু তাহের বাদী হয়ে ৪জনকে আসামী করে একটি মামলা করেন। পরে তাকেই ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা