রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মুন্নুজান হলে আম খাওয়ার সময় হল প্রাঙ্গণে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে নিষেধ করায় সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় হল শাখা ছাত্রলীগের নেত্রীরা। মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে হলের ভেতর এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী রুবিনা আক্তার সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী ও ২০৬ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্রী। মারধর করার পরে হল শাখা ছাত্রলীগের স্বঘোষিত সাধারণ সম্পাদক সুরাইয়া আক্তার সুরভী ও তাদের অনুসারীরা ওই কক্ষে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে জানা গেছে। ভাঙচুর করার সময় সোহাগী ও দেবলিনা নামে দু’জন ছাত্রী আহত হয়েছেন। তাদেরকে রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে পাঠানো হয়।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থীরা গাছ থেকে আম পেড়ে চেঁচামেচি করে মাঠের মধ্যে আম খাচ্ছিল। রুবিনা আক্তারের পরীক্ষা থাকায় নিচে এসে তাদেরকে অন্য জায়গায় যেতে বলে। ফলে আম খাওয়া শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের শরণাপন্ন হয়ে তাকে দুঃখ প্রকাশ করতে বলতে বলে। রুবিনা দুঃখ প্রকাশ না করায় হল প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর ও আবাসিক শিক্ষক সেখানে উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা তাকে ও তার রুমের অন্য মেয়েদের আটকে রেখে ছাত্রলীগের নেত্রীরা। এসময় তারা রুবিনার রুমে ভাঙচুরও চালায়।
এসময় ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সরকার ফারহানা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগ নেত্রী সরকার ফারহানা আখতার সুমি বলেন, রাতে আম খাওয়া নিয়ে সিনিয়র জুনিয়র নিয়ে হলে একটু ঝামেলা হয়েছিল। জুনিয়র শিক্ষার্থীরা বিষয়টা আমাকে জানালে সেখানে আমি উপস্থিত হয়ে রুবিনাকে দুঃখ প্রকাশ করতে বলি। কিন্তু সে দুঃখ প্রকাশ না করে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। এতে শিক্ষার্থীরা তাকে রুমে আটকিয়ে রুমের জানালা ভাঙচুর করে। এসময় তার রুমের মেয়েরা ভিতর থেকে কাঁচ দিয়ে ঢিল ছুঁড়লে বাইরের দুইজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।
মুন্নুজান হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. তানজিমা জোহরা হাবিব বলেন, আম খাওয়া নিয়ে খুব সামান্য একটা বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। কিছু শিক্ষার্থীরা বিষয়টিকে খুবই বাড়াবাড়ি করছিল। পরে রাতেই আমি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর গিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ এপ্রিল, ২০১৬/মাহবুব