রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যার তিনদিন পর রাবি শিক্ষক সমিতি ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি তুলে নেয়। কিন্তু এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিলে তারা আবার আন্দোলনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে শিক্ষক সমিতি। এদিকে শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে আজ ষষ্ঠ দিনের মতো সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন বিভাগ, সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, র্যালিসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ড. মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা একটি আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু রেজাউল করিম হত্যায় আজ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীসহ পুরো দেশ উত্তাল। সেখানে আমরা ঘুমিয়ে থাকতে পারিনি। তাই জরুরি সভা ডেকে আন্দোলনে নেমেছি। আজ আন্দোলন করছি, প্রতিদিনই বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট ও মানববন্ধন করবো, যতদিন না খুনিদের শাস্তি হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়ে বলছি রেজাউল করিমের মেয়ে শতভীর কান্না শুনেন, স্ত্রী-ছেলের কান্না শুনেন। বোঝার চেষ্টা করেন, তারা কেমন আছে। আপনি হয়তো বিষয়টি আরো ভালো বুঝবেন, কারণ আপনি এভাবে নৃশংসভাবে পরিবারকে হারানোর বেদনা কতো ভয়াবহ।’
মানববন্ধনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুল বলেন, ‘পুলিশ, গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কয়েকটা বিষয়কে ধরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনো কূল কিনারা পৌঁছতে পারেনি। এর আগেও আমরা শিক্ষককে হারিয়েছি তারও কোনো কূল কিনারা পাইনি। পুলিশ বার বার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। তাই পুলিশ প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনারা যদি না পারেন তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দেন।’
গত ২৩ এপ্রিল রাবি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে নিজ বাড়ি থেকে ১০০ গজ দূরে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তারপর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।
বিডি-প্রতিদিন/২৮ এপ্রিল ২০১৬/শরীফ