সংবাদ প্রকাশের জের ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শাহ মখদুম হলের এক সাংবাদিকের কক্ষ থেকে আসবাবপত্র ও টাকা লুট করে ওই কক্ষে তালা দিয়েছে হলটির প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
হলের ওই কক্ষটিতে পরিবর্তন ডটকমের রাবি প্রতিনিধি ও রাজশাহীর স্থানীয় দৈনিক সানশাইনের স্টাফ রিপোর্টার জাকির হোসেন তমাল ও দর্শন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মিরাজুল ইসলামের আবাসিকতা ছিল।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাকির হোসেন তমাল বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম অফিসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে কক্ষে এসে আমাকে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এরপর তিনি নিজেই আমার মশারি টেনে ছিড়ে ফেলেন। সেই সময় সঙ্গে আসা কর্মচারীরা আমার ও আমার রুমমেটের জামা-কাপড়, বিছানাপত্রসহ সবকিছু নিয়ে যান। এসময় আমার বেডের নিচে থাকা পাঁচ হাজার টাকাও নিয়ে যায়।’
ওই সাংবাদিক আরও বলেন, ‘কক্ষে এরকম তাণ্ডব চালানোর সময় আমাকে গালিগালাজ করে বের করে দেন প্রাধ্যক্ষ। পরে রুম থেকে সবকিছু নিয়ে যাওয়ার সময় প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘এটা কী তোর বাবার হল, দুই ঘণ্টার মধ্যে হল থেকে বেরিয়ে যাবি। পরে দুপুর ১২টার দিকে রুমে তালা লাগিয়ে দেন প্রাধ্যক্ষ।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি ওই কক্ষে বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থী। প্রাধ্যক্ষ হলে দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রাধ্যক্ষের অনিয়ম নিয়ে এ পর্যন্ত আমি পাঁচটি নিউজ করেছি। গত বৃহস্পতিবার কর্মচারী ও হল প্রাধ্যক্ষের অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রাধ্যক্ষ আমার ওপর ক্ষেপে যান। তার জের ধরেই আমাকে কোনো রকম নোটিশ না দিয়ে কক্ষ থেকে জোর করে বের করে দেন তিনি।’
ওই হলের অপর আবাসিক শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিক মেহেদী হাসান বলেন, ‘কোনো সংবাদের জন্য ফোন দিয়ে প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি বরাবরই খারাপ ব্যবহার করেন। এ বিষয়ে ওই হলের প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নিয়ম মেনেই তার কক্ষ থেকে সব কিছু অফিসে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে যা কিছু আছে তা হল থেকে যাওয়ার সময় তাকে ফেরত দেয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘শাহ শখদুম হলের ওই ঘটনায় ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। এরপর হলের প্রাধ্যক্ষকে ডেকে আমি কথা বলেছি। লিখিত অভিযোগ না পেলে কোনো সিদ্ধান্তে যেতে পারছি না।’
এদিকে সাংবাদিকের কক্ষ লুট ও তালা মারারা ঘটনায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন, রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটি, রাবি প্রেসক্লাব উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এছাড়াও রাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন ও উদীচী রাবি সংসদ থেকে প্রাধ্যক্ষের এ কাজকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করে দ্রুত তার পদত্যাগ দাবি করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৭ মে ১৬/ সালাহ উদ্দীন