বাগমারার আউচপাড়া ইউনিয়নের হাটগাঙ্গোপাড়ায় আওয়ামী লীগের দুইপক্ষ ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলায় ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে এক হাজার ২০০ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
রবিবার বিকেলে দায়ের করা মামলাটির বাদী হয়েছেন হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মাসউদ আলী সরকার। মামলায় পুলিশের উপর হামলা, সরকারি কাজে বাঁধাদান ও আওয়ামী লীগের এক কর্মী গুলিতে নিহতের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর পুলিশ সুপার নিশারুল আরিফ।
শনিবার বিকেলে হাটগাঙ্গোপাড়া বাজারে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মুখোমুখি সংঘর্ষ বেধে যায়। এসময় গুলিতে আওয়ামী লীগের দুই কর্মী নিহত হন।
পুলিশ সুপার নিশারুল আরিফ জানান, সংঘর্ষে পুলিশসহ পক্ষ ছিল তিনটি। অপর দুই পক্ষের একটি আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আরেকটি বিদ্রোহী। সংঘর্ষের সময় তিন পক্ষই শক্তি প্রদর্শন করেছে। সেখানে পুলিশ ছাড়াও অন্যরাও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে। ফলে আওয়ামী লীগ কর্মী সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক কাদের গুলিতে নিহত হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে সেটি জানা যাবে।
শনিবার বিকেলে বাগমারার আউচপাড়া ইউনিয়নের হাটগাঙ্গোপাড়া বাজারে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সরদার জান মোহাম্মদের সমর্থকদের সঙ্গে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী শহিদুল ইসলাম শহীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পুলিশের উপর হামলা চালানো হয়। এক পর্যায়ে ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের মধ্যে ছয় পুলিশ সদস্যসহ ১৬ জনকে রাজশাহী মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চতুর্থ দফার তফসিল অনুযায়ী শনিবার বাগমারা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এর দুইদিন আগে বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাচন কমিশন থেকে উপজেলার সবগুলো ইউনিয়নের নির্বাচন স্থাগিত করা হয়। নির্বাচন স্থগিত করা হলেও ভোটের মাঠের সমর্থন নিয়ন্ত্রণে রাখতে মিছিল বের করে দুই প্রার্থীর সমর্থকরা।
এদিকে, রাজশাহীর বাগমারায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ ও পুলিশের ত্রিমুখি সংঘর্ষে সাধারণ নেতাকর্মী হতাহতের পাশাপাশি থানার ওসিসহ ১০ পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭ জন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এরা হলেন, বাগমারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিব হাসান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমিনুল ইসলাম, কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, আফজাল হোসেন, শহীদুল ইসলাম ও মাসুদুর রহমান। আহতদের মধ্যে কনস্টেবল মাসুদুর রহমান ও শহীদুল ইসলাম রামেকের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। বাকিরা আছেন ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে।
রবিবার দুপুর একটার দিকে হাসপাতালের ওয়ার্ড দুটিতে গেলে পুলিশ সদস্যদের কারও হাতে, কারও পায়ে আবার কারও মাথায় ব্যান্ডেজ দেখা যায়। তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি আহত পুলিশ সদস্যরা।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৮ মে, ২০১৬/ আফরোজ