কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় যে স্থান থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল সেই ঘটনাস্থল ফের পরিদর্শন করেছে তদন্তকারী দল সিআইডি। আজ বুধবার দুপুরের দিকে সিআইডি-ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দের নেতৃত্বে একটি দল কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় যায়। তদন্ত সহায়ক দলটি সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থানের পর ঢাকার উদ্দেশ্যে কুমিল্লা ত্যাগ করে। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে তনুর মায়ের বক্তব্যে দেশব্যাপী তোলপাড় চলছে, দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
সূত্র জানায়, কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সহায়ক দলের প্রধান ও সিআইডি-ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দের নেতৃত্বে একটি দল কুমিল্লা সেনানিবাসে যান। সেখানে গিয়ে তনুর লাশ যেখানে পড়েছিল ওই স্থান পরিদর্শন করেন তারা। এসময় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন সিআইডি-কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান, অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার প্রণব কুমার রায়, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহমেদ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম ও সিআইডি-ঢাকার পরিদর্শক গোলাম মাওলাসহ অন্যান্যরা। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন তদন্তকারী দলের সঙ্গে ছিলেন। এসময় তারা তনুর বাবাকে এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে পঞ্চমবারের মতো আবদুল কাহহার আকন্দ কুমিল্লায় আসেন। মামলার রহস্য উদঘাটনে ওইদিন তনুর বাবা-মা, ভাই, চাচাতো বোন, কলেজের সহপাঠীসহ স্থানীয় শিল্পীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এদিকে, মঙ্গলবার সিআইডি কার্যালয়ে প্রবেশকালে তনুর মা আনোয়ারা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, 'সেনাবাহিনীর লোকজনই তনুকে হত্যা করেছে।' এসময় তিনি সার্জেন্ট জাহিদ ও সৈনিক জাহিদের নাম উল্লেখ করেন। তিনি দাবি করে বলেন, 'সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে পিকনিকে যাওয়ার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তনুকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিশোধ নিতে তনুর চুল কেটে নেয়া হয়েছে।'
তনু হত্যাকাণ্ডের ৫২ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে তনুর মা আনোয়ারা বেগমের এ ধরণের বক্তব্যে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সিআইডি-কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান সাংবাদিকদের জানান, তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি। তবে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও ঘাতকদের শনাক্ত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সহসাই এ বিষয়ে আলোর মুখ দেখাতে পারব বলে আশা করছি। '
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি জঙ্গল থেকে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তার বাবা ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
বিডি-প্রতিদিন/১১ মে ২০১৬/শরীফ