আট বছর আগে গাজীপুরে আবু সাঈদ নামের এক ঠিকাদার হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসি ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। যাজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তকে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছ
রবিবার দুপুরে গাজীপুর জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক এ আদেশ দেন বলে জানান আদালতের পিপি মো. হারিছ উদ্দিন আহমদ।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ধীরাশ্রম এলাকার ইউনুস আলীর ছেলে মো. হান্নান (৩৫), একই এলাকার শাহাদত আলীর ছেলে ইয়াকুব আলী (৩৫), চাঁদ মিয়ার ছেলে দেলোয়ার (৩৪), বাদশা মিয়ার ছেলে মো. মনির (৩৩) ও বেদন মিয়ার ছেলে ইকবাল হোসেন (২৮)। অপরদিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন সিটি করপোরেশনের ধীরাশ্রম এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে মাসুদ হোসেন (২৮)।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে রায় ঘোষণার সময় দেলোয়ার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্য আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন।
পিপি মো. হারিছ উদ্দিন বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০০৮ সালের ১৭ জুন রাতে জয়দেবপুরের ধীরাশ্রম এলাকার ঠিকাদার আবু সাঈদকে (৪২) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মারধরের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে নিহতের লাশ ধীরাশ্রম রেলওয়ে স্টেশনের উত্তরে রেল লাইনের পাশের একটি জমিতে ফেলে পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে এলাকাবাসীর সংবাদের ভিত্তিতে জয়দেবপুর থানা পুলিশ আবু সাইদের লাশ উদ্ধার করে। নিহতের মাথা ও কপালের ডান পাশে, চোখে, বুকে ও গলায়সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে জখমের চিহ্ন ছিল। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা বাদী হয়ে ১৮ জুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে এ ঘটনায় জড়িত থাকায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ইয়াকুব আলী হত্যার করার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তদন্ত শেষে পুলিশ ইয়াকুব আলী, হান্নান ওরফে হান্নু, দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু, মো. মনির, মো. ইকবাল হোসেন ও মো. মাসুদ ওরফে মাইছ্যার বিরুদ্ধে গত ২০০৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
শুনানিকালে ১৩জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ওই হত্যা মামলায় আসামিরা দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় রবিবার গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ওই রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর আদালত এলাকায় উপস্থিত নিহতের বাবা ও দু’সন্তান রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তা রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান।
প্রসিকিউশনের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি মো. হারিছ উদ্দিন আহম্মদ এবং আসামী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবির, লাবিব উদ্দিন ও সালেহ উদ্দিন রিপন।
বিডি-প্রতিদিন/০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/মাহবুব
বিডি-প্রতিদিন/০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/মাহবুব