জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক সাধারণ শিক্ষার্থীকে ব্যাপক মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের দুই সন্ত্রাসী। যাদের বিরুদ্ধে বিদেশী পিস্তল নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দেওয়াসহ ইয়াবা ও মাদক চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। শনিবার দুপুরে মারধরের শিকার লোক-প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ভেজাল বিরোধী সংগঠন ‘কনজুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ’র জাবি শাখার সদস্য সামছুল আরেফিন হাসিব সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
হাসিব দাবি করেন, 'গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে শহীদ সালাম-বরকত হলে সামনে গেলে কোনো কারণ ছাড়াই জামার কলার ধরে ব্যাপক মারধর শুরু করেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক হাওলাদার মহিবুল্লাহ'।
মারধরের শিকার হাসিব নিজেকে ৪১তম ব্যাচের আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের ছাত্র পরিচয় দিলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে শহীদ সালাম-বরকত হলের অবৈধ ছাত্র নিজাম ও মহিবুল্লাহ। এ সময় তার মাথায়, ঘাড়ে ও পেটে আঘাত করেন তারা। পরবর্তীতে হাসিবের মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেন অভিযুক্তরা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইয়াবা ও মাদক সেবনকারী এই দুই ছাত্রলীগ নেতা।
যাদের বিরুদ্ধে ছাত্রত্ব শেষ হলেও অবৈধভাবে হলে অবস্থান করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপ ও মোবাইল চুরির অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই সিন্ডিকেট সদস্যরা নেশার খরচ জুগাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি করে অন্যের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেন। অভিযুক্ত মহিবুল্লাহ দর্শন বিভাগের ৩৭তম ব্যাচের ও নিজাম পরিসংখ্যার বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের সাবেক ছাত্র।
আহত হাসিব সাভারের একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি জানান, 'ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর অভিযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ক্যাম্পাস খুললে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি চেয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে'।
হলের জুনিয়র ছাত্রলীগের কর্মীরা দাবি করেন, 'এর আগেও অর্থনীতি বিভাগের আছাদ নামের এক ছাত্রকে ব্যাপক মারধর করেন তারা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো কারণ ছাড়াই মাতাল অবস্থায় জুনিয়রদেরকে মারধর করেন এই সন্ত্রাসীরা'।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দিলেও এই দুই ইয়াবার ব্যবসায়ী বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। যারা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ইসলামনগর, আমবাগান ও গেরুয়ার বিভিন্ন জায়গায় নেশা জাতীয় দ্রব্য বিক্রি করে থাকেন।
এ বিষয়ে মারধরের কথা স্বীকার করে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম খান বলেন, 'মারধর করা ভূল হয়েছে। এ জন্য আমরা দু:খিত। হলে ল্যাপটপ ও মোবাইল চুরির বিষয়ে নিজের সংলশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে তার ছাত্রত্ব আছে বলে দাবি করেন'।
ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাওলাদার মহিবুল্লাহ মারধরের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, 'এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না'।
বিডি-প্রতিদিন/তাফসীর