রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষিকা আকতার জাহান জলির (৪৫) মৃত্যুর ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। শনিবার রাজশাহীর মতিহার থানায় তার ছোট ভাই কামরুল হাসান রতন মামলাটি করেন। আকতার জাহান জলিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তিনি মামলাটি করেছেন বলে জানা যায়।
মতিহার থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, ‘নিহতের ছোট ভাই মামলায় কারো নাম উল্লেখ না করে কেউ তার বোনকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন।’ উল্লেখ্য শুক্রবার বিকেলে শিক্ষকদের আবাসিক ভবনে নিজ কক্ষের দরজা ভেঙে আকতার জাহানের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এই বিভাগে তার সহকর্মী সহযোগী অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ‘আকতার জাহানকে তার ঘরে মশারির ভেতরে শোয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। তার মুখে ফেনা ও রক্ত বেরিয়ে আসার মতো কালো দাগ ছিল।’
পরে ওই ঘরের টেবিলে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে, যেখানে তিনি ‘আত্মহত্যার’ কথা জানিয়ে ‘কেউ দায়ী নয়’ বলে উল্লেখ করলেও তিনি তার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে নিজের সন্তানের গলায় ‘ছুরি ধরার’ অভিযোগ আনেন।
ডায়েরির সঙ্গে মিলিয়ে পুলিশ বলেছে, ‘আকতার জাহানের হাতের লেখার সঙ্গে মিলে গেছে তা’। এর মধ্যে শনিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মরদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষ হয়।
শনিবার দুপুরে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. এনামুল হক বলেন, ‘সুরতহাল অনুযায়ী বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি। তবে ময়নাতদন্তের ভিসেরা রিপোর্ট বের হলে আসল কারণ জানা যাবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে ১৯৯৭ সালে শিক্ষিকা হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন আকতার জাহান। চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগেই তার বিয়ে হয় তানভীর আহমেদের সঙ্গে, যিনি বর্তমানে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।
সহকর্মীরা জানান, ‘তানভীরের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হলে ২০১২ সালে জুবেরী ভবনের ৩০৩ নম্বর কক্ষে ওঠেন আকতার জাহান। স্কুলপড়ুয়া ছেলে তখন বাবার সঙ্গে থাকলেও মাঝেমাঝে মায়ের কাছে আসত। এরই মধ্যে গত বছরের শেষ দিকে তানভীর আবার বিয়ে করেন।’
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনের নিজ কক্ষ থেকে শিক্ষিকা আকতার জাহান জলির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/তাফসীর