বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ৫৪ ধারা এবং সাদা পোশাকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে গত বছরের ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাদা পোশাকে গ্রেফতারের বেলায় অবশ্যই পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। সাথে গ্রেফতারি পরোয়ানাও থাকতে হবে। তুলে নেওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকটজনকে অবহিত করতে হবে। আসামির মৌলিক ও মানবাধিকার সংরক্ষণসহ গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার নির্দেশনাও দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনাও এই সরকার তোয়াক্কা করে না। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরবেলা এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
বিরোধী দলের ওপর দমন-নিপীড়ণ, খুন-নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির পাশাপাশি আবারো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে গুম করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে তুলে নেওয়া হলেও তাদের সন্ধান মিলছে না। এ জন্য নিখোঁজ হওয়া লোকজনের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে এক দুই বছর পরে গ্রেপ্তারের নাটক সাজালে গুমের শিকার পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে এসব নাটকের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
রিজভী বলেন, গত দুই দিন আগে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হন গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার আবুল কাশেম। তিন দিন অতিবাহিত হলেও তার কোন খোঁজ মিলছে না। তার পরিবার থানায় জিডি করে পুলিশের সহায়তা চাইলেও পুলিশ তার কোন সন্ধান দিতে পারছে না। সম্প্রতি কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছের ঘের থেকে একটি প্রাডো গাড়ি উদ্ধারে দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত সোমবার কাপাসিয়া থানায় হাজির হয়ে গাড়ির মালিকের স্ত্রী সালেহা বেগম দাবি করেন তার স্বামী হেফজুর রহমানকে ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে গুলশান থেকে তুলে নিয়ে যায়। গাড়ি পাওয়া গেলেও নিখোঁজ ব্যক্তির এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুম-খুনের রাজনৈতিক কর্মসূচি চালু করেছিল তার ছেদজ্যোতি এখনও টানেনি। আর শিকার হয়ে আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেছে ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হীরু, হুমায়ুন কবির পারভেজ, চৌধুরী আলম, জাকির, সুমন, মুন্নাসহ বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ। গুম-খুনের ফেস্টিভ্যাল এখন জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার