যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের (জিএসপি) বিষয়ে দেশটি এখনও পূর্বের অবস্থানেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাট।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আশুলিয়ার ইউনিক বাসস্ট্যান্ডে আওয়াজ ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত এসময় আরও বলেন, জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেসের (জিএসপি) জন্য যে শর্তগুলো বেধে দেওয়া হয়েছিল সেগুলো পূরণ করতে হবে। সেগুলো প্রতিপালনে সরকারকে আরও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তবে মুল কাজটা কিন্তু শিল্প মালিকদেরই। বার্নিকাট বলেন, তিনি নিজেও চান বাংলাদেশ এই সুবিধাভুক্ত হোক। তবে সে জন্য আরও উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দেন তিনি।
পোশাক খাতে বলা হয় অশান্ত পরিবেশ, মজুরি নিয়ে তোলা হয় অভিযোগ এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, শ্রমিকদের মজুরি বেতন বাড়াতে হবে- এমন দাবি করা হয়। তবে আমি বলবো এটি একান্তই মালিক ও শ্রমিকের বিষয়। ঘরের স্ত্রীর সঙ্গে যদি ভালো সম্পর্ক তৈরি করা যায় তবে, কোনো দ্বন্দ্ব থাকে না সেখানে কোনো তৃতীয় পক্ষও অনুপ্রবেশ করতে পারে না অস্থিরতা হয় না। এছাড়াও শ্রমিকদের আলোচনা করার মতো কোন ট্রেড ইউনিয়ন না থাকায় শ্রমিকদের কথা বলার জায়গা নেই। বাংলাদেশকেও পোশাক খাতের সেই অস্থিরতা দূর করতে নিজেদের মালিক শ্রমিক মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে।
মালিক শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই শ্রমিকরা যথাযথভাবে তাদের অধিকার আদায়ে সঠিক ব্যক্তির কাছে যেতে পারেন না। এ বিষয়ে শ্রমিক সংগঠনের ভূমিকা অনেক। মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাট আরো বলেন, অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা একটি অঞ্চল। আঞ্চলিক সংযোগের অভাবে বাংলাদেশ ও তার প্রতিবেশীরা বড় ধরনের সুযোগ হারাচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগও হারাচ্ছে বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত বা চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিযোগিতা নেই। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে যে কোনো দেশ বা সংস্থার সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক।
অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জনে বাংলাদেশের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে মার্শা বার্নিকাট বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে গেলে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে পাওয়া বর্তমান সুবিধাগুলো বাংলাদেশ আর পাবে না। জ্বালানি ও বাণিজ্যে সহযোগিতা বাড়লে এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়লে ২০২১ সাল-পরবর্তী সময়ে অগ্রগতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে তা বাংলাদেশের জন্য সহায়ক হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেত্রী নাজমা রহমান, বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির শ্রমিক নেত্রী কল্পনা আক্তার, বিজিএমইএর কর্মকর্তারা সহ আরো অনেকে।