রঙ-তুলি নিয়ে কেউ আঁকছে মুক্তিযুদ্ধের ছবি, কেউ বা মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য, ফুল-পাখি-নদী-গাছপালা, কারও তুলিতে জীবন্ত হয়ে উঠছে পাহাড়-সমুদ্রসহ নানা অনুষঙ্গ। কে কার চেয়ে ভালো করতে সেই চেষ্টা তো রয়েছেই। সোমবার সকালে রাজধানীর এ্যাপোলো হাসপাতালের অডিটরিয়ামে দেখা গেছে এমন দৃশ্য।
রঙ-তুলি হাতে নিয়ে এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় প্রায় অর্ধশতাধিক শিশু-কিশোর। সবার টেবিলের মাঝে সাজানো নানা খাবার কিন্তু সেদিকে কারো খেয়াল নেই। একমনে ছবি এঁকে চলেছে শিশুরা। ছবি আঁকা শেষে কেউ কেউ মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে উঠে যাচ্ছে মঞ্চে। উপস্থিত দর্শককের নানা মজার ছড়া, গানে মাতিয়ে রাখছে। কেউ আবার দলবদ্ধ হয়ে নৃত্য পরিবেশন করে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে দর্শকদের।
এসব শিশুদের সবকিছুই স্বাভাবিক। কিন্তু সব স্বাভাবিকতার মধ্যে একটু ব্যতিক্রম আছে। তারা অটিজমে আক্রান্ত। বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে এ্যাপোলো হাসপাতালের এই ব্যতিক্রমী আয়োজন।
অটিজম সচেতনতা পালনে গত ১ এপ্রিল থেকে তিন দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে এ্যাপোলো হাসপাতাল। এর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ১-২ এপ্রিল ব্যাপী বিনামূল্যে অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের হেলথ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। আজ সোমবার অনুষ্ঠানের শুরুতে সচেতনতা বিষয়ক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এরপরেই শুরু হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা সাস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি 'ইনক্লুসিভ লার্নিং ফর চিল্ডড্রেন উইথ অটিজম' বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করা হয় বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন, আনন্দ নিকেতন স্কুল ও এএলসি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে।
হাসপাতালে বাইরে ছিল বাহারি কারুশিল্প পণ্যের প্রদর্শনী। এরসবই অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের হাতে তৈরি। অনুষ্ঠানে শিশুদের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও রাজধানী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন আগা খান শিক্ষা বিভাগের প্রধান ফাতিমা হুসেইন, এ্যাপোলো হাসপাতালের মেডিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালস ড: প্রসাদ আর মুগলিকার, ব্যবসায় উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক এনায়েত উল্লাহ খানসহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরা।
বিডি প্রতিদিন/৩ এপ্রিল, ২০১৭/ফারজানা