চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে রাজনীতি ও মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করে একটি শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। আগামী জুলাই থেকে এ নীতিমালা কার্যকর হবে বলে।
সোমবার দুপুরে চসিকের কেবি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে চসিক ১১৪ পৃষ্ঠার এ শিক্ষা নীতিমালা প্রকাশ করে। শিক্ষা নীতি প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা নাজিয়া শিরিন, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুমন বড়–য়া, কলেজ পরিদর্শক কাজী নাবিজুল ইসলাম, শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল হক ডিউক, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, সৈয়দা কাশপিয়া নাহরিন দিশা ও ফারহানা জাবেদ প্রমুখ।
নীতিমালায় ‘শিক্ষার্থীদের আচরণবিধি’ শিরোনামের ২১তম অধ্যায়ের ১৬ নম্বর ধারায় মোবাইল ফোন এবং ১৮ নম্বর ধারায় রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। নীতিমালায় মোবাইল ফোন ব্যবহার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে মোবাইল ফোন বহন ও ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এর ব্যতিক্রম ঘটলে মোবাইল ফোন জব্দ করা হবে এবং শুধু অভিভাবক এসে বিষয়টি মিমাংসা করলে মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়া হবে। তবে কোনো অভিভাবক শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট মনিটরিং/কাউন্সেলিং/গাইড শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠান প্রধানের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন এবং কোনো শিক্ষার্থী অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠান প্রধানের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন।
রাজনীতি প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণ রাজনীতিমুক্ত বিধায় ক্যাম্পাসে কোনো রাজনৈতিক দল বা অঙ্গ সংগঠনের নামে সভা, সমাবেশ, মিছিল ও দেয়াল লিখন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোনো শিক্ষার্থীকে এ সব কাজে সংশ্লিষ্টতা পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, "সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহে প্রতি বছর ৪৩ কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। আজ আমরা যে শিক্ষা নীতি প্রকাশ করছি তা বাস্তবায়ন করতে গেলে আরো অনেক বেশি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। তবুও আমরা নগরবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখছি।"
সিটি মেয়র আরও বলেন, "দেশে অপরাজনীতি এখনো চালু আছে। এ অপরাজনীতি করতে গিয়ে আমাকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করছেন একটি মহল। কিন্তু আমি ব্যর্থ হলে পুরো চট্টগ্রাম শহরই ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সেটি তারা বুঝতে চাইছেন না।"
প্রসঙ্গত চসিকে বর্তমানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়, ২১টি কলেজ (স্নাতক ৭টি ও উচ্চ মাধ্যমিক ১৪), ৮টি বালক বিদ্যালয়, ১৪টি সহ শিক্ষা বিদ্যালয়, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭টি কিণ্ডারগার্টেন, ৩৫০টি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, ১টি থিয়েটার ইনস্টিটিউট, ১টি কম্পিউটার ইনস্টিটিউট, ৩টি কম্পিউটার কলেজ ও একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩ এপ্রিল, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-১৯