রাজধানীতে গণপরিবহন নৈরাজ্য নিয়ে নেতাদের দুষলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। তিনি বলেন, আমরা পুরো সিস্টেমটার পরিবর্তন আনতে চেষ্টা করছি। কিন্তু সমস্যা এখানে ‘এতো আন্ডার মানি পে করে, নেতারা এতো আন্ডার মানি পেতেন, সেটা ভাঙতে কষ্ট হচ্ছে’।
বৃহস্পতিবার গুলশান-২ নং সার্কেল এলাকায় রাশিয়ান দূতাবাসের অবৈধ ব্লক অপসারণ অভিযান চলাকালে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
রাস্তায় শ্রমিক-যাত্রী মারামারির প্রসঙ্গ তুলে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, রাজধানীতে প্রায় ২০০টি রুটে ২০০ জন মালিকের ৬ হাজার ৩৯০টি গাড়ি রেজিস্ট্রি করা আছে। এই দু’শ’ রুট মানে এখান থেকে ফার্মগেট, গুলশান-২, গুলশান-২ থেকে গুলশান-১, গুলশান-১ থেকে নতুনবাজার। আমরা চেষ্টা করছি এতোগুলো মালিককে ৬ থেকে ৭টি হোল্ডিং কোম্পানিতে নিয়ে আসতে। তখন আর তার বাসে কে উঠলো, না উঠলো এটা কোনো ব্যাপার থাকবে না। এটা করতে পারলে বাসের মারামারি কমে যাবে।
তিনি বলেন, এজন্য আমাদের ৬ থেকে ৭টি রুট তৈরি করতে হবে। গ্রিন রুট, রেড রুট। এটা করতে পারলে তখন রাস্তায় বাসে মারামারি করবে না। কারণ সেই বাসে যদি একজন যাত্রীও না ওঠেন, তারপরেও সেই কোম্পানি শেয়ারের মতো তার টাকা পাবেন। রাস্তার মারামারিটা বন্ধ হয়ে যাবে। আর বাসগুলো এই ৬ থেকে ৭টি হোল্ডিং কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
অবৈধ ব্লক অপসারণ করা হচ্ছে কাজটা সহজ না জানিয়ে মেয়র বলেন, রাজধানীতে ৬ হাজার ৩৯০ বাসের মধ্যে ৪ হাজার নতুন বাস থাকবে। বর্তমানে রাস্তায় ১ থেকে দেড় হাজার নতুন বাস আছে। এই বাসগুলো রাস্তায় রেখে বাকিগুলো তুলতে হবে। আমরা এই দেড় বছরে প্রায় ২৬টি মিটিং করেছি বাস মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে। এর পেছনে বিরাট একটি চক্র আছে। যেমন ছিলো সাত রাস্তাতে, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে।
তিনি আরও বলেন, 'এখানে এতো আন্ডার মানি পে করে। আশার কথা এই চক্র থেকে অ্যাসোসিয়েশনের মালিকরা বুঝেছেন যে শহরে শৃঙ্খলা আনতে হলে একটা নতুন পদ্ধতি বের করতে হবে। অনেক বড় বড় দেশ আছে যারা ভালো কাজ করছে। সেই সব দেশ রাজি হয়েছে। আমরা মোটামুটি ভালো অবস্থানে এসেছি।’
আনিসুল হক বলেন, রাজধানী থেকে প্রায় দুই হাজার বাস তুলে নিতে হবে। কি হবে সেটাও এখনও জানি না। ‘ইটস এ বিগ ফাইট’। কিন্তু আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আমরা একমত হয়েছি এটাই হলো বড় কথা। আশা করি আগামী মাসে আমরা অ্যাসোসিয়েশনের মালিকদের সঙ্গে বসে স্বাক্ষর করবো। তারপর সংবাদ সম্মেলন করে জানাবো। এখন যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে রুট ঠিক করা, ইলেকট্রনিক্স পদ্ধিতিতে টিকিটিং করা।
বিডি-প্রতিদিন/২০ এপ্রিল, ২০১৭/মাহবুব