ঋতুকালীন নারীর স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর আরও গুরুত্বারোপ করতে হবে। ঋতুকালীন নারীর স্বাস্থ্য নিয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের মিলনায়তনে (ইডব্লিউএমজি) গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋতু ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের যৌথ উদ্যোগে শনিবার সকাল ১০টায় 'ঋতুকালীন স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বাধা ও এর ভবিষ্যত : সরকারি-বেসরকারি-ব্যক্তিগত খাতের ভূমিকা' শীর্ষক ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ওয়াটার এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. খাইরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি নারী স্বাস্থ্য ও লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বৈঠকে তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, জীবনের সবক্ষেত্রেই- বাড়িতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, কর্মক্ষেত্রে কিংবা ভ্রমণকালীন নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সবাইকে নজর দিতে হবে। এজন্য দরকার লিঙ্গ সমতা নিশ্চিতকরণ। এ বিষয়ে যে কুসংস্কার, অচলায়তন আছে তা ভাঙতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রেড অরেঞ্জের কৌশলী যোগাযোগ উপদেষ্টা আইরিন বার্টেলডস। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিদিন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান নির্বাহী নঈম নিজাম। তিনি বলেন, 'ডিজিটালাইজ' যুগে প্রবেশ করলেও গ্রামাঞ্চলে এখনো কুসংস্কার বিদ্যমান। এর মূল কারণ, শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। ধর্মীয় কুসংস্কার থেকেও আমরা পুরোপুরি মুক্ত হতে পারিনি। ফলে নারীদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। যার যার অবস্থান থেকে নিজেদের কাজগুলো করতে পারলে এ বাধা দূর করা সম্ভব। আমরা বরাবরই এ ধরনের সামাজিক সচেতনতা ও গঠনমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। ভবিষ্যতে এ ধরনের সচেতনতামূলক কাজে জড়িত থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রিপ্রোডাকটিভ হেলথ সার্ভিসেস ট্রেইনিং অ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক কাজী সুরাইয়া সুলতানা, নেদারল্যান্ড ভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওয়াশ এলায়েন্স বাংলাদেশ (বিডব্লিউএ) এর কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর অলোক মজুমদার।
এছাড়া জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে কাজ করেন এমন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মী ও উদ্যোক্তারা গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে নারী স্বাস্থ্য নিয়ে নিজেদের কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। এ ক্ষেত্রে নারীরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন এবং কীভাবে তা বাংলাদেশের সার্বিক জনস্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব রাখছে তা নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, ঋতুকালীন নারীদের বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। তারা এসময় স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। স্বাভাবিক খাবার খাওয়া থেকে তাদের বিরত রাখা হয়। এটা কোনো রোগ নয়। কিন্তু শিক্ষার অভাব, সামাজিক কুসংস্কারসহ বিভিন্ন কারণে নারীদের এজন্য নিচু করে রাখা হয়। ফলে তারা হীনমন্যতায় ভোগেন। সামাজিক সহযোগিতার অভাবে বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়ে তারা মূলধারা থেকে পিছিয়ে পড়েন। এমনকি শিক্ষিত নারীদের মধ্যেও এ নিয়ে সচেতনতার অভাব আছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সামগ্রিকভাবে এগিয়ে আসলেই এ বিষয়টিকে একটি স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। এটি সরকারের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনেও বিশাল ভূমিকা রাখবে।
বিডি প্রতিদিন/২০ মে, ২০১৭/ফারজানা