চট্টগ্রামে এবারের ঈদ বাজারে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোরার প্রভাব পড়েছে। ক্রেতা শূন্য অভিজাত বিপণী বিতান থেকে শুরু করে হকার পর্যন্ত। প্রকৃতির বৈরি আচরণ ও ভারী বর্ষণে ক্রেতারা এখন মার্কেট বিমুখ। ফলে অধিকাংশ ব্যবসায়ীকে এখন অলস সময় পার করতে হচ্ছে। অপেক্ষায় থাকেন কখন একজন ক্রেতা আসবেন।
জানা যায়, চট্টগ্রামে ছোট বড় শতাধিক বিপনি বিতান আছে। এসব মার্কেট ঈদকে সামনে রেখে বর্ণিল পসরা এবং দেশি বিদেশী পণ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে। নগরের মার্কেকগুলো এখন ক্রেতায় টুইটুম্বর থাকার কথা। ব্যবসায়ীদের ব্যস্ত থাকার কথা বিকিকিনি নিয়ে। কিন্তু আজ পর্যন্ত আটটি রোজা চলে গেলেও তারা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
রিয়াজ উদ্দিন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বলেন, গত বছর এই সময়ে যে ব্যবসায়ী দৈনিক এক লাখ টাকার ব্যবসা করেছে, আজ সেই ব্যবসায়ীকে সর্বোচ্চ ২০-২৫ হাজার টাকার ব্যবসা করতে পারছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্রেতারা মার্কেটে আসতে পারছেন না। তবে আশা করছি, শেষ মুহুর্তেই ক্রেতারা বাজার মুখি হবে।
টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বলেন, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাসী এই বাজারে শবে বরাতের পর থেকেই কার্যত ক্রয় বিক্রয় শুরু হয়। এবারও তাই হয়েছিল। কিন্তু মাঝখানে মোরা ও ভারী বর্ষণের ফলে গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারে ক্রেতা নেই। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং।
চট্টগ্রাম সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি মো. মিরন হোসেন মিলন বলেন, বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখনো আমরা ঈদের ব্যবসা শুরু করতে পারিনি। অতীতে ১০ রমজানে আমরা দম ফেলার ফুরসত পেতাম না। কিন্তু এখল অলস সময় পার করছি। তাছাড়া বৃষ্টির কারণে অনেকেই এখন হকার থেকে বাজার করতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না।
জানা যায়, অতীতের মত এবারো বেশ প্রস্তুতি নিয়ে বসেছিল ফুটপাতের হকাররা। কিন্তু এবার তাদের অবস্থা বেশ নাজুক। বৃষ্টি তাদের ভোগান্তির কারণ হয়েছে। অনেক হকার ঋণ নিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন লাভের আশায়। কিন্তু ঈদ মার্কেটিংয়ের ৯দিন পার করলেও সময় গেছে ‘ব্যবসাহীন’ অবস্থায়।
সরেজমিন দেখা যায়, ফুটপাত থেকে অভিজাত মার্কেট- সর্বত্র ঈদ বাজারে সেজেছে। সবখানেই পোশাকের বাহার। ঈদ উপলক্ষে জামাকাপড় বিক্রি করার জন্য শতভাগ প্রস্তুত তারা। পোশাকে যেমন বৈচিত্র আসছে, তেমনি দামেও। কেউ প্রস্তুত উচ্চবিত্তের কেনাকাটার লক্ষ্য নিয়ে। কেউবা মধ্য ও নিম্মবিত্তের জন্য। নগরীর মার্কেটগুলোকে বিভিন্ন ধরনের লাইটিংয়ে সাজানো হয়েছে ক্রেতা আকর্ষণে। সাজসজ্জায় পিছিয়ে নেই ফুটপাতের দোকানও।
জানা যায়, নগরের হকারদের সুনির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে নগরের প্রায় বস বড় মোড়ে মোড়ে অবস্থান আছে হকারের। নগরীর স্টেশন রোড, নিউ মার্কেট মোড়, জিইসি মোড়, বহদ্দারহাট, বন্দরটিলা, চকবাজার, দেওয়ানহাট, চকবাজার, স্টেশন রোড, অলংকার মোড়, আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়, পাহাড়তলী, একে খান মোড়, কর্নেলহাট, কোতোয়ালি মোড়, ফিরিঙ্গিবাজার, জামাল খান, সিরাজউদ্দৌলা রোডে হকাররা ঈদের কাপড়সহ নানা সামগ্রী বিক্রি করছেন।