অটোরিক্সা চালক মো. শামীম সিকদার। ৩৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় স্ত্রী ও শিশু সন্তানদের নিয়ে ভাড়া থাকেন। নিজের শেষ সম্বল দিয়ে কিস্তিতে ক্রয় করেছেন একটি অটোরিক্সা। তার ও পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হতো এই অটোরিক্সা চালিয়ে।
শুক্রবার দুপুরে মহাসড়কে আসার কারনে পুলিশ তার রিক্সার ব্যাটারি খুলে নিয়ে যায়। অনেক আকুতি-মিনতি করেও পুলিশের কাছ থেকে রিক্সা ছাড়াতে না পেরে কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন ওই চালক। এতে তার মুখমণ্ডলসহ শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শামীম সিকদার বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার ভাইজোড়া গ্রামের শাজাহান সিকদারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার দুপুরে অটোরিক্সা নিয়ে আব্দুল্লাপুর-বাইপাইল সড়কের বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসে পৌঁছায় শামীম। কর্তব্যরত সার্জেন্ট আমিনুর রহমান ও ট্রাফিক সদস্য মহাসড়কে অটোরিক্সা চালানোর অপরাধে তার ব্যাটারি খুলে নিয়ে চলে যায়। পরে ব্যাটারি ফেরত দেওয়ার জন্য ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দুই হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না থাকায় সে ওই ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের পায়ে ধরে অনুরোধ করতে থাকেন। অনেক আকুতি-মিনতি করেও কোনো লাভ না হওয়ায় সেখান থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পরই কেরোসিনের বোতল নিয়ে ফিরে আসেন। ব্যাটারি ফেরত না দিলে নিজেকে পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। কর্তব্যরত সার্জেন্ট ও ট্রাফিক পুলিশের কাছ থেকে আশ্বাস না পাওয়ায় শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় অটো চালক।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ শাফিউর রহমান মিজান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের কোন গাফলতি আছে কি না- বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও ওই চালকের চিকিৎসার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার টাকাও দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/৩০ জুন, ২০১৭/ফারজানা