ঈদের আনন্দকে আরও রাঙিয়ে তুলতে চরম দুর্ভোগ আর ভোগান্তি মাড়িয়ে বাড়ি যেতে হয় সকলের। কিন্তু ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরতেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঈদ যাতায়াতে সঙ্গী হয় ক্ষতবিক্ষত সড়ক, যানবাহন সংকট, টানা যানজটসহ নানা দুর্ভোগ। মঙ্গলবার ঈদের ছুটি শেষ হলেও গত বৃহস্পতিবারও চট্টগ্রাম নগরীতে চিরাচরিত প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসেনি। কার্যত আজ শনিবার এবং আগামীকাল রবিবার থেকেই নগর ফিরে পাবে আপন চেহারা।
জানা যায়, দেশের ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র চাক্তাই, খাতুন গঞ্জ ও আসাদগঞ্জসহ অন্যান্য ব্যবসা কেন্দ্রগুলো গত বৃহস্পতিবারও তেমন জমেনি। তবে শনিবার থেকেই পুরোদমে শুরু হবে ব্যবসায়ীক কার্যক্রম বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই আজ শুক্রবার বিকাল থেকে গ্রাম থেকে নগরে মানুষ ফিরছে। শুক্রবার বিকালে নগরের প্রধান প্রবেশ পথ দক্ষিণে কর্ণফুলী ব্রিজ মোড়, উত্তরে অলংকার মোড়, অক্সিজেন মোড় এবং পূর্বে মোহরা নগরে ফেরার জটলা দেখা যায়। কিন্তু অনেক যাত্রীকে কাঙ্খিত যানবাহন না পাওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
পটিয়া থেকে আসা যাত্রী ইমরাম হোসেন কর্ণফুলী সেতুর মোড়ে বলেন, ‘প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে একটি বাসে করে কর্ণফুলী ব্রিজের উত্তর মোড়ে নামছি। কিন্তু এখন অটোরিক্সার জন্য অপেক্ষা করছি। ২০ মিনিট অপেক্ষা করেও একটি অটোরিক্সা পাচ্ছি না।’
কুমিল্লা থেকে নগরে ফিরে আসা সরকারি কর্মকর্তা রবিউল আলম বলেন, ‘ছুটি শেষ হওয়ায় শহরে ফিরে আসতে হয়েছে। সঙ্গে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় বাধ্য হয়ে বাস থেকে নেমে সিএনজি বা রিকশা খুঁজতে হচ্ছে। আর এ সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করলেও তারা অনেকটা নিরুপায়। তিনি বলেন, আলকরণ থেকে মুরাদপুর স্বাভাবিক সময়ে সিএনজি ভাড়া নেয়া হতো ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কিন্তু আজ দাবি করছে ৩০০ টাকা। এভাবে অটোরিক্সাগুলো নৈরাজ্য চালাচ্ছে।’
এদিকে শুক্রবার বিকেলে নগরীর বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন ও লঞ্চ ঘাটে শহরমুখী মানুষের পদচারণায় মুখর দেখা গেছে। তিন দিন আগেই সরকারি ছুটি শেষ হলেও অনেকেই শুক্রবার থেকে নগরে ফেরা শুরু করেছেন। কারণ এরই মধ্যে অনেকে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার ঐচ্ছিক ছুটি নিয়েছেন। সকলের নগরে ফেরার মাধ্যমে পুনরায় কোলাহলমুখর হয়ে উঠবে নগরী। ফিরে আসবে শহরের চির-চেনা সেই দৃশ্য। তবে বাড়ি যাওয়ার মতই নগরে ফেরায়ও যানবাহনের সংকট পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের।
যাত্রীদের অভিযোগ, কেবল ঈদের অজুহাত দিয়েই যানবাহনগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে। এ ব্যাপারে কারো কাছে অভিযোগ করারও সুযোগ নেই। তাছাড়া লোকাল অনেক গণপরিবহন ক্লোজডোর সার্ভিসের নামে যাত্রীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। ফলে দুর্ভোগকে সঙ্গী করে নগরে ফিরতে হচ্ছে।
অন্যদিকে, শহর-গ্রাম কোথাও নিয়মের তোয়াক্কা নেই। পরিবহন সেক্টরের সর্বত্রই চলছে নৈরাজ্য। পরিবহন সমিতিগুলোও নীরব ভুমিকা পালন করছে। এ সব নৈরাজ্যে অনেকটা তাদের নিরস সমর্থনের মত কাজ করছে। একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতাও এ নৈরাজ্য ছড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩০ জুন, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-১৩