টানা ২৯ দিন বন্ধ থাকার পর খুলনা-যশোরের রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ পাটকলে আবারো উৎপাদন শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলে কর্মচঞ্চলতা ফিরে আসে খুলনার শিল্পাঞ্চলে। এর আগে বুধবার রাতে খুলনার যুগ্ম শ্রম পরিচালকের দপ্তরে ত্রি-পক্ষিয় বৈঠকে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হলে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও মজুরি কমিশন গঠনসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনার ৮ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে ২৮ ডিসেম্বর থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়। এর মধ্যে খালিশপুর ও দৌলতপুর পাটকলের শ্রমিকরা ১৮ জানুয়ারি থেকে কাজে যোগ দেয়। বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)’র হিসাব মতে, ধর্মঘটের কারণে। মিলগুলোতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার পাটপণ্যের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
খুলনা-যশোর পাটকল শ্রমিক সিবিএ-ননসিবিএ পরিষদ কার্যকরী কমিটির আহবায়ক সোহরাব হোসেন জানান, ৮ থেকে ১০ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি না পেয়ে বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা কর্মবিরতী শুরু করে। দাবি আদায়ে রাজপথে ভুখা মিছিল, লাঠি মিছিল, জনসভা ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তবে ত্রি-পক্ষিয় বৈঠকে পাটকল কর্তৃপক্ষ বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়। ওই বৈঠকে স্থানীয় সাংসদ, পাটকল ও প্রশাসনের কর্মকর্তারাসহ শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সরেজমিনে খুলনার ক্রিসেন্ট ও প্লাটিনাম পাটকল ঘুরে দেখা গেছে, শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ায় প্রতিটি মিলেই কর্মচঞ্চলতা ফিরেছে। পুরোদমে শুরু হয়েছে পাট বাছাই-ফিনিসিং, পাট থেকে দড়ি ও চট তৈরির কাজ। তবে বকেয়া মজুরি না পাওয়ায় এখনো শ্রমিকদের চোখেমুখে রয়েছে হতাশার ছাপ।
পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন জানান, আগামী রবিবার থেকে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে। বিদেশে পাটপণ্যে বিক্রির অর্থ ও পাটকলগুলোর নিজস্ব ফান্ড থেকে শ্রমিকদের দুই থেকে তিন সপ্তাহের মজুরি দেওয়া হবে। বাকি বকেয়া পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে। এদিকে সিবিএ-ননসিবিএ পরিষদের ডাকে ১১ দফা দাবিতে আগামী রবিবার থেকে ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘট এক সপ্তাহ পিছিয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রিয় আহ্বায়ক সরদার মোতাহার উদ্দীন একথা জানিয়েছেন। একই সাথে সময়মতো দাবি পূরণ না হলে আবারো আন্দোলন কর্মসূচির হুশিয়ারী দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন