ইয়াবার দুই মামলার পলাতক আসামি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম জাহিদুর রহমান মনির মোল্লাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রবিবার বেলা ১২ টার দিকে ইয়াবার দুই মামলার আসামি মনির মোল্লা বরিশালের সিনিয়র মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন।
আদালতের বিচারক মো. শামীম আহম্মেদ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে একটি বিশেষ প্রিজন ভ্যানে মনিরকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. ইউনুস জামান মাদকের দুই মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা মনির মোল্লাকে কারাগারে নেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মনির নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকার মৃত ইসাহাক মোল্লার ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর রূপাতলীর ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর (ওজোপাডিকো) রেস্ট হাউজের একটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে ৪শ’ ৫২ পিস ইয়াবা উদ্ধার এবং এক পুলিশ কনস্টেবলসহ ৩ জনকে আটক করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। ওই সময় মনির মোল্লা আটক হলেও দলীয় প্রভাব বিস্তার করে তাৎক্ষণিক ছাড়া পায়।
এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন এসআই দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে পুলিশ কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম, ছাত্রলীগ কর্মী কামরুল ইসলাম ও সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদুলকে আসামি করে একটি এবং শুধুমাত্র সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদুলকে আসামি করে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন কোতয়ালী থানায়। তবে অজ্ঞাত কারণে দুটি মামলার এজাহার থেকে এম জাহিদুল ইসলাম মনির মোল্লার নাম বাদ দেয়া হয়।
কিন্তু অভিযানের সময় গ্রেফতার হওয়া সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ কর্মী কামরুল ইসলাম ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম জাহিদুর রহমান মনির মোল্লার ছত্রছায়ায় ইয়াবা ব্যবসার কথা স্বীকার করেন।
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুর রহমান মনির মোল্লাসহ মোট ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন। অভিযোগপত্রে আওয়ামী লীগ নেতা মনির মোল্লাকে একটি মামলায় ৪ নম্বর এবং অপর মামলায় ৩ নম্বর আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়।
মনির মোল্লার আইনজীবী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, ইয়াবা উদ্ধারের সঙ্গে মনির মোল্লার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এজহারে মনির মোল্লার নাম ছিল না। ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় মনির মোল্লা ‘ষড়যন্ত্রের’ শিকার। তার জামিনের জন্য উচ্চাদালতে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল