‘দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশে যে বৈষম্য চলছে বিশ্বের কোনো দেশে এমন নজীর নেই। শিক্ষা জাতীয়করণ ছাড়া বেসরকারি শিক্ষকদের দুরবস্থা দূর করা সম্ভব নয়। শিক্ষার মান উন্নত করতে হলে মোট জিডিপির কমপক্ষে তিন শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দিতে হবে। শিক্ষকরা যদি জাতি গড়ার কারিগর হন, তাহলে সর্বোচ্চ বিনিয়োগের জায়গা হচ্ছে শিক্ষা। তাই শিক্ষাখাতে বিরাজমান সঙ্কট দূর করতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ এখন সময়ের দাবি’।
‘শিক্ষা বাজেট : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক ও মুক্ত আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
শনিবার বরিশাল নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলে আঞ্চলিক শিক্ষক সমিতি এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
মুক্ত আলোচনায় প্রধান আলোচক ছিলেন রাজনীতি ও সমাজনীতির বিশ্লেষক এবং গবেষক দৈনিক সমকালের উপ-সম্পাদক অজয় দাস গুপ্ত। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোটার্স ফোরামের সভাপতি ও চ্যানেল আই’র বিশেষ প্রতিনিধি মোস্তফা মল্লিক।
সভাপতিত্ব করেন আঞ্চলিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফরিদুল আলম জাহাঙ্গীর। নগরীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এ গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, স্বাধীন বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নের লক্ষ্যে ৩৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গত ২ মেয়াদে শিক্ষা ও শিক্ষা ব্যবস্থার একটা টেকসই উন্নয়ন করেছে। ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও বেসরকারি কয়েকশ’ কলেজও করা হয়েছে জাতীয়করণ। সরকারি-এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন হয়েছে দ্বিগুণ। এতকিছুর পরও দেশের মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষার ৯৫ শতাংশই বেসরকারি এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের ওপর নির্ভরশীল। তাই শিক্ষকরা অপেক্ষায় আছেন নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশের জন্য।
এ গোলটেবিল বৈঠক ও মুক্ত আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. আব্দুল বাতেন চৌধুরী, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল মোতালেব হাওলাদার, ব্রজমোহন কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আক্তারুজ্জামান খান, মহিলা পরিষদ নেত্রী রাবেয়া খাতুন, মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মানিক বীর প্রতীক, সাংবাদিক মানবেন্দ্র বটব্যাল, উন্নয়ন সংগঠক কাজী জাহাঙ্গীর কবির, নাট্যজন সৈয়দ দুলাল, মানবধিকার জোট সভাপতি ডা. হাবিবুর রহমান, শিশু সংগঠক জীবন কৃঞ্চ দে ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাবেক সাংসদ তালুকদার মো. ইউনুস প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন