১৯ মে, ২০১৯ ১৪:২৯

সাভারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে সেমাই, চানাচুর

সাভার প্রতিনিধি:

সাভারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে সেমাই, চানাচুর

আসন্ন ঈদ উপলক্ষে সাভারে শিশু খাদ্য ও সেমাই তৈরির কারখানাগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এসব কারখানায় প্রতিনিয়ত অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে কাপড়ের রং মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই, চানাচুর, সন্দেশ, ছানাসহ বিভিন্ন শিশু খাদ্য। 

সাভার থেকে উৎপাদিত এসব শিশু খাদ্য ও সেমাই প্রতিদিন বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। নিম্নমানের ডালডা আর পোড়া তেল দিয়ে ভাজা এই সেমাই এবং শিশু খাদ্যে মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইয়ের কোন অনুমোদনই নেই।

সরেজমিনে সাভার বাজারে কাছে আড়াপাড়া মহল্লায় ‘বাবলু ফুড’ ও ‘নাজমা চানাচুর’ কারখানায় গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে। 

সেমাই তৈরির জন্য খামির (ময়দা দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করণ) রাখার ট্রের উপরে বসে-হাটাহাটি করে কাজ করছে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের হাত থেকে শরীরের ঘাম সেমাইতে ছড়িয়ে যাচ্ছে। নিম্নমানের ডালডা ও পোড়া তেলে প্রতিদিন তৈরি করা হচ্ছে শত শত মন সেমাই। ময়লা, গাদ ও দুর্গন্ধযুক্ত ট্রে এবং কাদাযুক্ত মেঝে পরিষ্কার করার কোন উদ্যোগ নেই মালিক পক্ষের।

পাশের নাজমা চানাচুর কারখানারও একই চিত্র। কাপড়ের রং মিশিয়ে তৈরি চানাচুর মেঝেতে ফেলে তার উপর দিয়ে হাটাচলা করছে শ্রমিকরা। ময়লা এসব চানাচুর পরে প্যাকেটজাত করে বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।

ইসমাইল হোসেন নামে সেমাই তৈরির এক কারীগর বলেন, আমরা এভাবেই সেমাই তৈরি করি। সাভারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ সেমাই সরবরাহ করা হয়। প্রশাসনের কেউ আসলে মালিকের সাথে যোগাযোগ করে চলে যায়। 

বাবলু ফুড লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিক বাবুল হোসেন দেওয়ান অস্বাস্থ্যকর, নোংরা পরিবেশে সেমাই তৈরি এবং কোন অনুমোদন না থাকার কথা স্বীকার করে এবিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন।

নাজমা চানাচুর কারখানার মালিক নান্নু দেওয়ান চানাচুরের প্যাকেটে বিএসটিআইয়ের সিল দেয়ার বিষয়ে অনুমোদনের কথা স্বীকার করলেও কোন ডকুমেন্টস নেই তাদের কাছে। এছাড়া নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চানাচুর তৈরির কথা তিনি অকপটে স্বীকারও করেন।

এদিকে ‘বাবলু ফুড’ আর ‘নাজমা চানাচুর’ কারখানা নয়, সাভারজুড়ে এমন অসংখ্য ভেজাল পণ্যের কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানার উৎপাদিত পণ্যের গায়ে ভুয়া বিএসটিআই'র সিল লাগানো রয়েছে।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে  অনুমোদনহীন কারখানা দুটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমজাদুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ ধরনের খাবার খেলে ফুড পয়জনিং, ডায়রিয়া, পেটের পীড়াসহ মারাত্মক অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ ধরনের নোংরা ও অস্বাসস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি খাবার না খাওয়াই ভালো।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর