১৭ জুন, ২০১৯ ১৫:০৮

দূষণে মরে যাচ্ছে বরিশাল ডিসি লেকের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

দূষণে মরে যাচ্ছে বরিশাল ডিসি লেকের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ

বরিশাল নগরীর ভিআইপি এলাকা হিসেবে পরিচিত রাজা বাহাদুর সড়কের ঐহিত্যবাহী ডিসি লেকের বড় বড় মাছ মরে যাচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে অব্যাহতভাবে পানি দূষিত হওয়ার পর গত দু’দিন ধরে ওই লেকে বড় বড় মাছ মরে ভেসে উঠছে।

স্থানীয় ও পথচারীরা মরা মাছগুলো তুলে নিয়ে যাচ্ছে। গত রবিবার বিকেলেও স্থানীয় এক যুবক প্রায় ২০ কেজি ওজনের বিশাল আকারের কাতল মাছ তুলে নেয়।

এর আগে ওইদিন সকালেও বিভিন্ন সাইজের মাছ মরে ভেসে উঠেলে পথচারীরা সেগুলো তুলে নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে দূষণের কবলে পড়ে নয়নাভিরাম এই লেকের পানি পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে পঁচা পানিতে ওই লেকের মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী হুমকিতে পড়েছে। তাই লেকের পানিতে থাকা মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী মরে কিংবা অর্ধমৃত অবস্থায় ভেসে উঠছে।

এতে নগরীর অন্যতম বিনোদন এলাকাখ্যাত ডিসি লেকের পাড়ে এবং সংলগ্ন গ্রিন সিটি পার্ক এবং বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা বিপাকে পড়ছেন।

লেকের পঁচা পানিসহ মৃত মাছ পঁচে দুর্গন্ধ ছড়ানোয় দর্শনার্থীরা অতিষ্ট হয়ে উঠছেন। লেকটির পাশেই জেলা প্রশসকসহ বিভাগীয় এবং জেলা পর্যায়ের সরকারি বাস ভবন রয়েছে। জেলা প্রশাসকের মালিকানাধীন এবং তত্ত্বাবধানে থাকায় এই লেকটি ডিসি লেক হিসেবে পরিচিত। 

বরিশাল পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আরেফিন বাদল জানান, ডিসি লেকের পানি নষ্ট হওয়ার বিষয়ে তারা এখন পর্যন্ত কিছুই জানেন না। তাদেরকে এই বিষয়ে কেউ অবহিতও করেননি। কি কারণে লেকের পানি নষ্ট হয়েছে সে বিষয়েও তারা নিশ্চিত নন। তাদের বিশেষজ্ঞ দল লেকের পানি পরীক্ষা করার পর লেকের পানি পঁচে যাওয়া বা মাছ মরে যাওয়ার রহস্য উদঘাটন করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির হাবিবুর রহমান জানান, দুই মাস আগে থেকে লেকের পানি নষ্ট হতে শুরু করে। বর্তমানে পুরো লেকের পানি দুষিত এবং পঁচে গেছে। পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

তবে কেন লেকের পানি নষ্ট হচ্ছে তার প্রকৃত কারণ তারা জানেন না। 

নাজির হাবিবুর রহমান জানান, লেকের পানি নষ্ট হওয়ায় গত দেড় মাস আগে মৎস্য বিভাগের পরামর্শে পানি শোধনের জন্য ১০ মন চুনা ফেলা হয়েছিল। এতে পানি শোধন না হয়ে আরও বিষাক্ত হয়ে গেছে। এ কারণে মাছ মরে ভেসে উঠছে। মাছ মরে যাওয়ার খবর পেয়ে মৎস বিভাগের কর্মকর্তারা গত রবিবার লেকটি পরিদর্শন করেন। তারা পানি শোধনের জন্য নতুন করে ওষুধ প্রয়োগ করেছেন লেকে।

জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, তিনি নিজেই ডিসি লেকের পানি পরীক্ষা করেছেন। সবশেষ গত রবিবার লেকের পানি শোধনের জন্য ১০ হাজার টাকা মূল্যের ২শ’ কেজি জিওলাইক ওষুধ পানিতে দেওয়া হয়েছে। ওষুধ পানির সঙ্গে মিশে গেলে মাছ মরা বন্ধ হবে। তবে এই ওষুধ প্রয়োগের পরে বৃষ্টি হওয়া জরুরি। কেননা বৃষ্টি ছাড়া ওষুধ পানির সঙ্গে মিশবে না। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় পাম্পের মাধ্যমে লেকে নতুন পানি দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর