বরিশালের উজিরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বহনকারী ব্যাটারিচালিত বক্সভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খালে পড়ে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ওই বক্সভ্যানে থাকা ১৮ জনের মধ্যে আরও ১১ জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। অপর ৫ ক্ষুদে শিক্ষার্থীকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই মাদ্রাসার বদলী ভ্যান চালক মহিউদ্দিন সিকদারও দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে উজিরপুর উপজেলার নতুন শিকারপুর মূলপাইনের শাখা সড়কের নির্মল মাস্টারের বাড়ির সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো- ময়মনসিংহের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে লামিয়া (৬) এবং একই উপজেলার সাকরাল গ্রামের সেলিম হাওলাদারের ছেলে আবদুল্লাহ (৭)। লামিয়া মূলপাই গ্রামে তার নানা বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতো। হতাহত সকলেই উজিরপুরের মূলপাইন দারুসুন্নাহ নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
স্থানীয় বাসিন্দা এমদাদুল কাশেম সেন্টু জানান, উপজেলার মূলপাইন দারুসুন্নাহ নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার নিয়মিত ভ্যান চালক একিন হাওলাদারের মা দুইদিন আগে মারা যাওয়ায় বদলী চালক হিসেবে মাদ্রাসার ভ্যান চালানোর দায়িত্ব পান একই এলাকার মহিউদ্দিন সিকদার। মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৮জন ক্ষুদে শিক্ষার্থী নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত বক্সভ্যান দারুসুন্নাহ নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার দিকে যাচ্ছিলো। মাদ্রাসার অদূরে মূলপাইন সড়কের নির্মল মাস্টারের বাড়ি এলাকা অতিক্রমকালে বক্স ভ্যানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়।
স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক চেষ্টা চালিয়ে ১৮ জনকে উদ্ধার করেন। তাদের মধ্যে ১৩ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. তানভীর শিশু শিক্ষার্থী লামিয়া এবং আবদুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করার কথা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, আহত ১১ জনের মধ্যে আবদুল্লাহ-আল নোমান (৭), আবদুল্লাহ-আল নাহিম (৫) রহমতুল্লাহ (৮), মুসা মোল্লা (৮), আসছিয়া (৬), হোসাইন (৭) ও তানিমকে (৮) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং গুরুতর অবস্থায় বেল্লাল সন্যামত (৬), নিয়াজ মাহমুদ (৬), মুক্তা (৯) ও আতিককে (৭) বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মাকসুদুর রহমান জানিয়েছেন, শিশুরা পানিতে ডুবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। তারা শারীরিকভাবে তেমন কোনো আঘাতপ্রাপ্ত হয়নি। তাদের চিকিৎসা চলছে।
আহত ভ্যান চালক অজ্ঞাত স্থানে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার একটি পা ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উজিরপুর থানার ওসি শিশির কুমার পাল জানান, নিহত দুই শিশুর স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের মরদেহ বিনা ময়না তদন্তে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম