বরিশাল নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশপুর এলাকার প্রতিবন্ধী নরসুন্দর বিমল চন্দ্র রায়ের শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে বৈশাখী রায় (১৬) পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। বয়সের সঙ্গে বৈশাখীর মানসিক কোন সমস্যা না থাকলেও শারীরিক বৃদ্ধি হয়নি অন্যদের মতো।
১৬ বছর বয়সেও তার উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট। সম্প্রতি বৈশাখীর বাবার করা আবেদনে সারা দিয়ে তাকে একটি কম্পিউটার উপহার দিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। গত রবিবার বিকেলে বরিশাল জেলা প্রশাসনে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈশাখীর হাতে কম্পিউটার তুলে দেন তিনি।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি বৈশাখী রায়কে। দৃঢ় মনোবল নিয়ে বৈশাখী পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। নগরীর আলহাজ্ব দলিল উদ্দিন বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাসের এখন এ করিম আইডিয়াল কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষে মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করছে সে।
বৈশাখীর মা অনিতা রানী জানান, দুই বোনের মধ্যে বৈশাখী ছোট। তার বড় বোন সরকারি মহিলা কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী। অনিতা রানী নিজে গৃহিনী এবং বৈশাখীর বাবা বিমল চন্দ্র রায়ও শারীরিক প্রতিবন্ধী।
কিন্তু পরিবারের হাল ধরতে স্থানীয় একটি সেলুনে কাজ করে ৪ জনের সংসার চালান বিমল। নিজে প্রতিবন্ধী হলেও মেয়েদের শিক্ষিত করার প্রবল ইচ্ছে তার। শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ের আগ্রহের কারণে কিছুদিন আগে একটি কম্পিউটার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন বিমল রায়।
জেলা প্রশাসক খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন প্রতিবন্ধী বিমল রায়ের জীবন যুদ্ধ এবং পড়ালেখায় বৈশাখীর আগ্রহের কথা। তাই বৈশাখীর শিক্ষা কার্যক্রম আরো গতিশীল করাসহ সে যাতে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে সে জন্য তাকে একটি কম্পিউটার দেন তিনি। এ সময় তার মাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসকের তহবিল থেকে কিনে দেওয়া কম্পিউটার পেয়ে খুবই খুশী বৈশাখী রায়। তিনি জানিয়েছেন ঘরে বসে এখন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নেবেন তিনি।
জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, বৈশাখী শারীরিক প্রতিবন্ধি হলেও মেধাবী এবং দৃঢ় মানসিকতা সম্পন্ন। তাকে পড়াশুনা এবং স্বাবলম্বি হওয়ার জন্য উৎসাহ দিতে কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে। বৈশাখী অবশ্যই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছবে বলে আশা জেলা প্রশাসকের।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল