মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও অটল বিহারী বাজপেয়ীয় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের নামে ঢাকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার নামকরণের দাবি জানিয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। এসময় তিনি বলেন, ভারতের সাম্প্রতিক ঘটনাকে নিয়ে যারা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর বন্ধ করতে আন্দোলন করছেন, তারা দেশের ভালো চান না। এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশ ও ভারতের মৈত্রিকে অসম্মান করতে চান, মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান। এসময় তিনি এই কুচক্র মহলটিকে প্রতিহত করতে সরকারসহ সুশীল সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে শনিবার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ জানানো হয়। এতে আরও বক্তব্য রাখেন- শিল্পী হাশেম খান, সাবেক বিচারপতি এএইচ শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সংগঠনটির সহ-সভাপতি মুসনতাসির মামুন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির উপদেষ্টা আমজাত হোসেন, শ্যামলী চৌধুরী নাসরিন প্রমুখ।
শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, আগামী ১৭ মার্চ মুজিববর্ষ পালন করবে বাংলাদেশ। এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য আসবেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বন্ধু রাষ্ট্র, ১৯৭১ যাদের অসামান্য অবদানের কথা ভুলবার নয়। সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফর এই অনুষ্ঠানকে আরও সাফল্য মণ্ডিত করবে। এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক কোনো বিষয় কাজ করে না। এই সফর বন্ধুত্বের, জাতির পিতাকে সম্মান জানানোর।
এসময় ভারতের কলকাতা ও দিল্লীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে সড়ক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও অটল বিহারী বাজপেয়ীয় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের নামে ঢাকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তরার নামকরণের দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, এর মাধ্যমে ভারতের ১৩০ কোটি মানুষের দেশে বাংলাদেশের সম্মান বহুগুণে বেড়ে যাবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহ্বান জানাই। নামকরণের এই প্রস্তাব ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের কাছে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিচারপতি এএইচ শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ভারতে যেটা ঘটছে এটা আদালতের রায়ে করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভারতে কাছে আর কোনো উপায় নেই। সেখানে অনেক প্রদেশের মানুষ এটার বিরোধীতা করছেন। এসব বিষয় ভারতের, তাদের নিজস্ব ব্যাপার। এর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর বাতিলের দাবিতে আন্দোলন মানে দেশের সঙ্গে চক্রান্ত করা। আমাদের মৈত্রীর বন্ধনকে অস্বীকার করা। যারা এসব আন্দোলন করছেন তারা না জেনে, না বুঝে কথা বলছেন, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
মুনতাসির মামুন বলেন, মুজিববর্ষ নিয়ে অনেকেই বাড়াবাড়ি করছেন। দেশের প্রতিটি জেলাতে আজ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। এসবের চেয়ে যদি একটি করে ডিজিটাল স্কুল তৈরি করা যেতো তাহলে অনেকেই উপকৃত হতেন। মুজিব শতবর্ষ পালন হচ্ছে অথচ তার জীবনী নিয়ে ১০০ পৃষ্ঠার কোনো লেখা পাই না। বিশ্বে আজ সাম্প্রদায়িক, অশান্তি শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির নিদর্শন হিসেবে সরকারের প্রতি এক কোটি টাকার মুজিব শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করার দাবি জানান তিনি।
শিল্পী হাশেম খান বলেন, মুজিববর্ষ নিয়ে ম্যুরাল করে অতি বাড়াবাড়ি করা হয়েছে। এসব ভেঙে ফেলা উচিত, কারণ কোনো ম্যুরাল তৈরি করতে সময়, উদ্দেশ্যর প্রয়োজন এটা কোনোটাই নেই। অতিবাড়াবাড়ি মানে জাতির পিতাকে অপমান করা।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম