২ জুলাই, ২০২০ ১৫:৫৯

শের-ই বাংলা মেডিকেলের দুই ওয়ার্ডবয়কে নির্যাতনের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

শের-ই বাংলা মেডিকেলের দুই ওয়ার্ডবয়কে নির্যাতনের অভিযোগ

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের দায়িত্বরত দুই ওয়ার্ডবয়কে ছাত্রাবাসে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রাতে করোনা ওয়ার্ডে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন সহকর্মীর কক্ষের বদলে ভুলক্রমে পাশে ডাক্তারের কক্ষে ডাকাডাকি করার অপরাধে তাদের দুইজনকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে চরম শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনা কাউকে জানালে গুমসহ হত্যার হুমকি দেয়া হয় তাদের। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ করে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। তারা পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করে অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়েছে। এ ঘটনার দ্রুত বিচার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দিয়েছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ বিচারের আশ্বাস দেয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

শের-ই বাংলা মেডিকেলের জরুরী বিভাগের ওয়ার্ডবয় মো. বাদশা করোনা উপসর্গ নিয়ে করোনা ওয়ার্ডের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন। গত ২৮ জুন (রবিবার) রাতে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন সহকর্মী বাদশার ১৮ নম্বর কক্ষের বদলে ভুলক্রমে পাশে ডাক্তারের ১৫ নম্বর কক্ষে ডাকাডাকি করেন ওয়ার্ডবয় মো. দিদারুল ইসলাম ও মো. নুরুল ইসলাম। কক্ষ ভুল হওয়ায় দায়িত্বরত নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে সহকর্মীর ১৮ নম্বর কক্ষে চলে যায় তারা। পরদিন সোমবার (২৯ জুন) রাতে দিদার ও নুরুল করোনা ওয়ার্ডে ডিউটি করছিলো। ওইদিন রাত ৯টায় ইন্টার্ন চিকিৎসক মো. আরিফ ও মো. সজল তাদের মুঠোফোনে ফোন দিয়ে করোনা ওয়ার্ডের নীচে ডেকে নেয়। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসক আরিফ ও সজলের নেতৃত্বে ৩টি মোটরসাইকেলযোগে ৬/৭জন লোক দিদার ও নুরুলকে জিন্মি করে ২ নম্বর ইন্টার্ন হোস্টেলে নিয়ে যায়। নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের কক্ষে ডাকাডাকি করার অপরাধে সেখানে তাদের দুইজনকে চরম শারীরিক নির্যাতন করে তারা। এ ঘটনা কাউকে জানালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের হত্যা করে লাশ গুম করার হুশিয়ারী দেয় বলে অভিযোগ করেন আহত ওয়ার্ডবয় দিদারুল ইসলাম ও মো. নুরুল ইসলাম। 

এদিকে নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের কক্ষে ডাকাডাকি করার ঘটনায় করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসক হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে পরিচালক ওই দুই ওয়ার্ডবয়কে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়। দুই সহকর্মীকে শারীরিক নির্যাতন এবং উল্টো কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়ার খবর জানাজানি হলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভে ফেঁটে পড়েন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। তারা পরিচালকের কক্ষ ঘেরাও করে এবং সহকর্মীদের নির্যাতনকারীদের দৃস্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আল্টিমেটাম দেয়। 

তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে ওই দুই ওয়ার্ডবয়কে ছাত্রাবাসে ডেকে নিয়ে শুধুমাত্র ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করার হয়েছে বলে দাবি করেন অভিযুক্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে উত্যক্ত করার ঘটনা ধামাপাচা দিতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা উল্টো তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন বলে দাবী করেন ইন্টার্ন ডক্টরস্ হোস্টেল শাখার সভাপতি দাবীদার ইন্টার্ন চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম। 

এদিকে করোনা ওয়ার্ড এবং ছাত্রবাসের ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর