ডাকাতির পর গ্রেফতার এড়াতে মোবাইল ফোন পুড়িয়ে ফেলতো ওরা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের নজরদারী এড়াতে নিজেদের ব্যবহৃত জামা-কাপড় হয় পুড়িয়ে ফেলতো- নয়তো নদীতে ফেলে দিতো। নিজেদের ডাকাত দলকে এরা ‘কোম্পানি’ বলে ডাকে। গত ২৮ অক্টোবর সাভারের আমিনবাজারে এক ইতালি প্রবাসীকে দিনেদুপুরে এলোপাথাড়ি গুলি করে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার পরও তারা এমনটাই করেছে। তবে এ যাত্রায় রক্ষা হয়নি।
গত শুক্রবার রাতে সাভারের বিরুলিয়া থেকে এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪ এর একটি দল। গ্রেফতারকতৃরা হলো মোস্তাফিজুর রহমান (৩৮), নাসির (৩৮) ও আবদুল বারেক সিকদার (৪৫)। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেট কার, দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলবার, ১২ রাউন্ড গুলি, একটি ছুরি, দুইটি লোহার পাইপ ও নগদ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব।
আজ বেলা ১২টায় রাজধানীর কাওরানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোজাম্মেল হক বলেন, গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা এর আগেও একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছে। তারা জামিনে মুক্ত হয়ে একই কাজ বারবার করে। এই চক্রের দলনেতাসহ আরও কয়েকজনের নাম পেয়েছি। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, আমানুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাভার থানায় মামলা হলে র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এই গ্রুপের ১০-১২ জন সদস্য রয়েছে। প্রত্যেক সদস্যের আলাদা ছদ্মনাম রয়েছে। দলটির অন্যতম সদস্য ব্যাংকে সেদিন ক্যাপ পরা অবস্থায় ছিল। আটক বারেক সিকদার ডাকাতদের অস্ত্র ও ছিনতাইয়ের টাকা বহন করার কাজে ব্যবহৃত গাড়ির চালক। ডাকাতির এক ঘটনার পর কয়েকদিনের জন্য সবাই গা ঢাকা দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করত। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তীতে মূলহোতার পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন কোনো জায়গায় ডাকাতি করতো।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, নগদ টাকা ও ব্যাংককেন্দ্রিক ডাকাতির জন্য তাদের রয়েছে নিজস্ব সোর্স বা তথ্যদাতা। তাদের দেয়া তথ্যেই ডাকাতির দিনক্ষণ নির্ধারিত হতো। ঘটনার ২-১ দিন আগে থেকে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, পর্যবেক্ষণ ও রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে ডাকাতির পর পালিয়ে যাওয়ার নিরাপদ পথ ঠিক করত তারা।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক