মুরগি ও মাছের ওষুধের নামে আমদানি হচ্ছে অবৈধ ওষুধ, রাসায়নিক দ্রব্যাদি। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির সময় আন্ডারভয়েসের (কম মূল্য দেখিয়ে) মাধ্যমে কর ফাঁকি দিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বেশ কিছু কোম্পানি।
অনুসন্ধানে এমনি একটি পোল্ট্রি ফিড ট্রেডিং কোম্পানির নামে অভিযোগ পাওয়া গেছে, তারা গত দু’বছর ধরে মুরগি ও মাছের ওষুধের নামে অবৈধ ওষুধ এবং রাসায়নিক দ্রব্য আমদানি করে আসছে।
আদিয়ান এগ্রো লিমিটেডের নামে অভিযোগ আছে, তারা কর ফাঁকি দিয়ে এবং অবৈধ পণ্য আমদানি করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। নিজ কোম্পানির পাশাপাশি বানোয়াট নামেও প্রচুর অর্থ বাগিয়ে নিয়েছে।
পাশাপাশি এমন অভিযোগও আছে, ঢাকার বিভিন্ন ওষুধের দোকানিদের সাথে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আদিয়ান এগ্রো অবৈধ ওষুধ, ইয়াবা ট্যাবলেট এবং রাসায়নিক দ্রব্য বিক্রি করছে।
হাজার হাজার পোল্ট্রি কৃষকেরা আদিয়ান এগ্রোর এই অবৈধ ব্যবসার প্রতি ক্ষোভ জানিয়েছে। আদিয়ানের অসাধু ব্যাবসার খেসারত গুণতে হচ্ছে তাদের।
এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে আদিয়ান এগ্রোর বিরুদ্ধে। তবে ক্ষমতা সম্পন্ন হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
সম্প্রতি গাজীপুরের একজন মুক্তিযোদ্ধা ও পোল্ট্রি ব্যবসায়ী আদিয়ান এগ্রোর বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং প্রতারণার অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর চিঠি দেন এবং ফার্মটির কার্যক্রম নজরদারি করবার দাবি জানান।
অভিযোগ অনুযায়ী, আদিয়ান এগ্রো হাঁস ও মুরগির খাবারের নামে নিষিদ্ধ রাসায়নিক দ্রব্য এবং ওষুধ আমদানি করে। অভিযোগপত্রে আদিয়ান এগ্রোর মোট পাঁচ পরিচালকের নাম এবং বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। তারা হচ্ছেন, ড. জামিল হোসাইন, ড. প্রান্তিককান্তি রায়, মো. শফিকুল ইসলাম, তাসলিমাতুল মোস্তাফি এবং ডলী হায়দার।
অভিযোগ অনুযায়ী, পরিচালকরা হাঁস ও মুরগির খাবার স্বল্পমূল্যে আমদানি করলেও, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সেই খাবার আসল দামের তুলনায় আটশো গুণ বেশি দামে বিক্রি করে। আর এভাবেই তারা গত ৫ বছরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বাড়তি দামে বিক্রির মাধ্যমে জমানো বিপুল অর্থকে প্রতিষ্ঠানটি কখনোই তাদের করের নথিপত্রে উল্লেখ করেনি। আদিয়ান এগ্রোর অসাধু ব্যবসার ফলে ক্ষতির শিকার হচ্ছে হাজার হাজার কৃষক। অবৈধ রাসায়নিক দ্রব্য এবং নেশাজাতীয় দ্রব্যের পাশাপাশি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাঁস ও মুরগির খাবারের দাম বাড়ানোর বিষয়টিও দুদকের তদন্ত করে দেখা উচিৎ বলে আবেদন করেন ও পোল্ট্রি ব্যবসায়ী।
আদিয়ান এগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জামিল হোসাইন অভিযোগ নাকচ করে বলেন, তারা পুরোপুরি সরকারি সব নিয়ম-নীতি মেনে ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো ওষুধ আমদানি করি না। আমরা লাইভস্টক অফিস থেকে এনওসি (অনাপত্তিপত্র) নিয়ে হাঁস-মুরগির খাদ্য সম্পূরক পণ্য আমদানি করি। ড. জামিলের দাবি তাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ‘মিথ্যা’। দাবি করেন, কিছু মানুষ তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত