রাজশাহীতে ডোবায় পড়ে থাকা ড্রামের ভিতর থেকে উদ্ধার ননিকার রাণী রায়ের (২৪) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় প্রেমিক পুলিশ কনস্টেবলসহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রবিবার বিভিন্ন সময় তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে পিবিআইয়ের নিজস্ব ফেসবুক পেজে জানিয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে যে মাইক্রোবাসে নিয়ে গিয়ে লাশ ফেলে দিয়েছিল সেই মাইক্রোবাসও উদ্ধার করেছে পিবিআই সদস্যরা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পুলিশ কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র সরকার (৪৩)। তার বাড়ি পাবনার আতইকুল্লা উপজেলার চরাডাঙ্গা গ্রামে। পিবিআই রাজশাহীর একটি চৌকশ পুলিশ টিম রবিবার ভোরে নাটোরের লালপুরস্থ আসামির বোন-জামাইয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। নিমাই চন্দ্র জিআরপি থানায় কর্মরত।
গ্রেফতার সহযোগীরা হলেন, নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার আদারীপাড়ার কবির আহম্মেদ (৩০), রাজপাড়া থানার শ্রীরামপুর এলাকার সুমন আলী (৩৪) এবং মাইক্রোবাস চালক নগরীর বিলশিমলা এলাকার আব্দুর রহমান (২৫)। গ্রেফতার পুলিশ কনস্টেবল নিমাই চন্দ্রের দেয়া তথ্যে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে পরিবারের সদস্যরা ওই তরুণীর লাশ শনাক্ত করে। নিহত ননিকা রাণী রায়ের বাড়ি ঠাকুরগাঁ সদরের মিলনপুরে। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং ইন্সটিটিউট থেকে সদ্য অধ্যয়ন সমাপ্ত করেছেন। নগরীর পাঠানপাড়া এলাকার একটি মেসে থাকতেন ননিকা। রবিবার রাতে তার লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পিবিআই জানায়, নগরীর তেরখাদিয়া এলাকার একটি বাড়িতে ওই তরুণীকে হত্যা করা হয়। ওই বাড়িটি জিআরপির কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র গত ৬ এপ্রিল ভাড়া নেয়। তার স্ত্রীও পুলিশ কনস্টেবল। সে বগুড়ায় কর্মরত। রবিবার বিকেলে পিবিআই সদস্যরা ওই বাড়িতে তদন্তে যায়।
পিবিআই আরও জানায়, কনস্টেবল নিমাই হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সে জানিয়েছে ৬/৭ বছর ধরে ননিকা রাণীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়। সম্প্রতি সে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এ কারণে তাকে হত্যার পর ড্রামে লাশ ভরে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয়। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার নগরীর অদূরে বাইপাস সড়কের সিটি হাটের কাছে একটি ডোবায় ড্রামের মধ্যে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে শাহমখদুম থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। লাশ উদ্ধারের সময় ডিবি, সিআইডি ও পিবিআই সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় তারা পৃথকভাবে তদন্ত শুরু করে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন