৬ মে, ২০২১ ২১:০১

‘জীবন থাকতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কনক্রিটের স্থাপনা হতে দেব না’

অনলাইন ডেস্ক

‘জীবন থাকতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কনক্রিটের স্থাপনা হতে দেব না’

স্বাধীনতার ঐতিহ্য, ইতিহাসের সাক্ষী রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা তৈরির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ‘গৌরব ৭১’। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ঢাকার ২ কোটি মানুষের অক্সিজেন সরবরাহ করে রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এ উদ্যান অনেক ইতিহাসের জ্বলন্ত সাক্ষী। এর সাথে স্বাধীনতা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অনেক স্মৃতি জড়িত। আমাদের জীবন থাকতে এই ঐতিহাসিক উদ্যানে কোনো কনক্রিটের স্থাপনা হতে দেব না। 

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি এসএম মনিরুল ইসলাম মনির সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গৌরব ৭১-এর উপদেষ্টা ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, বিশিষ্ট নাট্যাভিনেতা ঝুনা চৌধুরী, পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান, বিশিষ্ট আইনজীবী ও আইনের পাঠশালার সভাপতি  সুব্রত দাস খোকন, বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার, ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডা. ইব্রাহিম প্রমুখ। 

মানববন্ধনে সংহতি বক্তব্য রাখেন অনিকেত রাজেশ, ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু ও আহমেদ গিয়াস। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিবার্তা নিউজ পোর্টালের সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি, হাবিবুর রহমান রোমেল, রবিউল রুপমসহ ‘গৌরব ৭১’-এর অনান্য নেতৃবৃন্দ। 
 
মানববন্ধনে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি, লেখক, গবেষক গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ধারক ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ধ্বংস করার জন্য, মুক্তিযুদ্ধের চিহ্ন মুছে ফেলার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। ঢাকাবাসীর ফুসফুস এই উদ্যান। এটা শুধু বৃক্ষ নিধনের ষড়যন্ত্র নয়, ইতিহাস নিধনের ষড়যন্ত্র। 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণসহ অনেক অমুছনীয় ইতিহাসের সাক্ষী এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আজ ক্ষমতায়। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা আজ রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন। আমরা বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী এই হটকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করবেন। 

গোলাম কুদ্দুছ আরও বলেন, যেকোনো অসুন্দর ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে যখন রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ হয় তখনই ‘গৌরব ৭১’ রাজপথে নামে। ‘গৌরব ৭১’ আজ একা নয়, সকল প্রগতিশীল দল ও সাংস্কৃতিসেবী সকল অন্যায়ের প্রতিবাদে ‘গৌরব ৭১’-এর এই প্রতিবাদে সাথে আছি এবং থাকব।

নাট্যাভিনেতা ঝুনা চৌধুরী বলেন, পুরো দেশ মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে লকডাউনে আছেন, আর সুযোগেই পরিবেশ ধ্বংস করে, ইতিহাসের সাক্ষী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। এটি শুধু বৃক্ষ নিধন নয়, মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস নিধন। এটি শুধু স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র নয়, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র। আমরা বেঁচে থাকতে এ উদ্যানে কনক্রিটের স্থাপনা হতে দেবো না।

পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে মহৎ উদ্যােগ নিয়েছেন। কিন্ত মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের কিছু অসৎ ব্যক্তি মহৎ উদ্দেশ্যকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করছে। বিএনপি জোটের আমলেও এমন ষড়যন্ত্র হয়েছে, আমরা প্রতিহত করেছি। আগামীতেও সকল অন্যায় সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করব।

সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী সুব্রত দাস খোকন বলেন, প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন, এই উদ্যানকে কেন্দ্র করে সংস্কৃতি বলয় তৈরি করবেন। কিন্তু কুচক্রী মহল এখানে ফুড কোর্টসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করে ইতিহাস বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করছে। এই কাজ যারা করছেন তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হতে পারেন না।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন শাহীন সমাবেশে ঘোষণা দেন যে, কাজ বন্ধ না করা হলে ঈদের পরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকলকে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। 

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর