ডিস ব্যবসায়ীর কাছে প্রতি মাসে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ডিস ব্যবসায়ী।
শনিবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন সিদ্ধিরগঞ্জের এনায়েত নগর এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী এমরান হোসেন।
অভিযোগ গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৮ নং ওয়ার্ডের এনায়েতনগর মসজিদ রোড এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. এমরান হোসেন অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি বৈধভাবে গত ৫ বছর যাবত ডিস ব্যবসা চালিয়ে আসছে। গত আড়াই বছর পূর্বে নাসিক ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা (৪৬) ও তার সহযোগী মমিনুল আলম পুষণসহ (৩৩) অজ্ঞাত আরো ৪/৫ ব্যক্তি ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে নির্ভিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে প্রতি মাসে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এমরান হোসেন নির্ভিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনার জন্য এক লাখ টাকা চাঁদা কখনো কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা এবং কখনো তার সহযোগী মমিনুল আলম পুষণকে দিয়ে আসছিল।
অভিযোগ পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, করোনাকালীন সময়ে গ্রাহকরা ঠিকমতো ডিস ভাড়া প্রদান না করায় এমরান হোসেন অর্থ সংকটে থাকায় তাদের চাহিদা মতো প্রতি মাসে চাঁদার এক লাখ টাকা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়। এতে কাউন্সিলর ও তার সহযোগীরা ব্যবসায়ী এমরানের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ৮ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টায় তার কর্মচারী আব্দুর রহিম বাদশা উত্তর এনায়েত নগর এলাকায় সংযোগ মেরামত করতে যায়। এসময় কাউন্সিলরের সহযোগী মমিনুল আলম পুষণ আরো ৬-৭ জন অজ্ঞাত নামা ব্যক্তি আব্দুর রহিম বাদশাকে আটক করে এমরানকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে।
একপর্যায়ে কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তার সামনেই তার সহযোগী মমিনুল আলম পুষণ কোমর থেকে দেশীয় ধারালো চাকু বের করে হুমকি দেয়। পুষণ বলে, এখন থেকে তুই কাউন্সিলরকে (রুহুল আমিন মোল্লাকে) প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দিবি, নতুবা তর ব্যবসা বন্ধ করে দিব। এমনকি এ বিষয় নিয়ে কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি বা কোথাও অভিযোগ করলে এমরানকে প্রাণে মেরে ফেলর হুমকি দেয়। এসময় ওই প্রতিষ্ঠানের ফাইবার জয়েন্ট মেশিন (যার মূল্য ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা) জোরপূর্বক নিয়ে যায়। পাশাপাশি মাসিক ভাড়া আদায় করতে নিষেধ করে চলে যায়।
এতে ভীত সন্ত্রস্ত এমরান হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় শনিবার দুপুরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার অনুলিপি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা হলে নাসিক ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা বলেন, আড়াই বছর ধরে ডিস ব্যবসায়ী ইমরান টাকা দিয়ে আসছে। কিন্তু গত ৪ মাস ধরে ঠিক মতো টাকা দিচ্ছে না। সে আমার কাছেই টাকা দিত, আমি অন্য একজনকে দিয়ে দলীয় পোলাপাইনদের বন্টন করে দিতাম। থানায় অভিযোগ যে কেউ করতে পারে, ওসির সাথে কথা হইছে, ওসি বলছে ২/৩ দিন পর বসবে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন