২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৬:২৪

অপহরণ মামলার ভিকটিমকে রাজধানী থেকে উদ্ধার, পরস্পর বিরোধী বক্তব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

অপহরণ মামলার ভিকটিমকে রাজধানী থেকে উদ্ধার, পরস্পর বিরোধী বক্তব্য

বরিশালের গৌরনদী থানায় ৯ বছর আগের একটি অপহরণ মামলার ভিকটিমকে (কথিত অপহৃত) ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে মামলার এক আসামি। আসামির দাবি অপহরণ মামলা একটি সাজানো নাটক। তাদের হেনেস্তা করতেই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে কথিত অপহৃত ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দাবি যারা অপহরণ করেছিল, তারাই তাকে উদ্ধার করে থানায় সোপর্দ করেছে। 

উদ্ধারকৃত রাসেল মৃধাকে আজ বুধবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আরেকটি অপহরণ মামলার আসামি হওয়ায় তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক। 

গৌরনদীর কলাবাড়িয়া গ্রামের ১৪ বছর বয়সের কিশোর ছেলে রাসেল মৃধাকে অপহরণ ও গুমের অভিযোগে ২০১২ সালে গৌরনদীর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তার মা মনোয়ারা বেগম। রাসেল ওই গ্রামের জালাল মৃধার ছেলে। এর আগে থেকেই কিশোর বয়সে একটি অপহরণ মামলার আসামি ছিল রাসেল। রাসেলকে অপহরণ মামলায় ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৩ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দেন গৌরনদী থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক ফোরকান হোসেন। এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে ৫ জন আসামি দীর্ঘদিন হাজতবাস করেন। বাকী ৯ জন এখনও পলাতক। 

এ অবস্থায় গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ থেকে কথিত অপহৃত রাসেলকে উদ্ধার করে গৌরনদী থানায় সোপর্দ করে মামলার এক আসামি এস. রহমান। ৯ বছর আগে কথিত অপহৃত কিশোর রাসেল এখন বয়সে যুবক এবং দুই সন্তানের পিতা। রাসেল মৃধার দাবি, যারা অপহরণ করেছে, তারাই তাকে উদ্ধার করে থানায় পৌঁছে দিয়েছে। উদ্ধারের পর থানায় সোপর্দ করার আগে আসামিরা তাকে নির্যাতন করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গৌরনদী থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক ও বর্তমানে একই থানার শরিকল তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক ফোরকান হোসেন বলেন, তার আগে আরও ৩ জন কর্মকর্তা মামলা তদন্ত করেছেন। তিনি চতুর্থ কর্মকর্তা হিসেবে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালতে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। তার তদন্ত সঠিক ছিল।

অন্যদিকে, অপহরণ মামলার দুই আসামি মো. রায়হান মৃধা ও মো. আলামিনের দাবি জমি নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলার জের ধরে সব শেষ রাসেলকে আত্মগোপন করিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দেয়া হয়েছে। মামলায় নির্দোষভাবে অনেকে কারাভোগ করেছে। মামলার খরচ চালাতে গিয়ে আসামিদের অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছে। আসামি পরিবারগুলো মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে নিজেরা উদ্যোগী হয়ে রাসেলকে খুঁজে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তারা এই হয়রানির বিচার দাবি করেন। 

ঘটনার সময় রাসেল বয়সে কিশোর হওয়ায় আজ বুধবার দুপুরে তাকে ওই মামলায় বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করে গৌরনদী থানা পুলিশ। এ সময় ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় তাকে নিজ জিম্মায় জামিন দেন। তবে রাসেল আরেকটি অপহরণ মামলার আসামি হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল ওই মামলায় তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বলে জানান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ফয়জুল হক।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর