দেশের মধ্যশিক্ষিত, বেকার ও নিরীহ যুবক এবং সরল শ্রেণির মানুষদের টার্গেট করে মোটিভেশনাল বক্তব্য দিয়ে কোম্পানিতে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এরপর কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া। আর এই কাজটি করেছে ‘সুইসড্রাম’ নামে এক মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) প্রতিষ্ঠান।
সুইসড্রাম কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য প্রথমে সুইসড্রাম অ্যাপ- এ অ্যাকাউন্ট খুলে সদস্য হতে হয়।
এরপর সদস্য সংগ্রহ করে আরও বিনিযোগের কথা বলা হয়। এরপর এক স্থান থেকে অন্যত্র কার্যালয় স্থানান্তর করতেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কাজী আল-আমিন।
গ্রেফতার বাকিরা হলেন- সালাউদ্দিন (৪৬), শেখ মো. আব্দুল্লাহ (৫৯), মনিরা ইয়াসমিন (৪৩), মো. জাহিদ হাসান (৪২), স্বপন মিয়া (৩৮), শাহজাহান (২৫), মিজানুর রহমান (৫০), বাদশা ওরফে সুলাইমান (২৬), ইমাম হোসাইন (৩৫), আব্দুর রাজ্জাক ওরফে আনারুল ইসলাম (৪২), মিজানুর রহমান (৩৯), ফারুক উদ্দিন (৪৭), আঞ্জুমানআরা বেগম (৫২), শেখ রবিন (৩৩), ইমাম হোসাইন (৩৫) ও মোছা. আছমা বেগম (৩৫)।
অভিযানে প্রতারণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রীসহ দুটি ল্যাপটপ, একটি প্রজেক্টর, কোম্পানির ব্যবহৃত দুটি সিল, কোম্পানির ব্যানার দুটি, বিভিন্ন ধরনের চারটি ডায়েরি ও খাতা, একটি রেজিস্ট্রার খাতা, কোম্পানির ১২৫টি লিফলেট, প্রতারণায় ব্যবহৃত সুইসড্রাম কোম্পানির ভুয়া ওষুধ/প্রসাধনী সামগ্রী, সুইসড্রাম কোম্পানির ২৫ সেট ডিস্ট্রিবিউটর ওয়ার্কিং ফাইল, ২৩টি মোবাইল ফোন এবং নগদ এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৫ টাকা জব্দ করা হয়।
সন্ধ্যায় র্যাব-৪- এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণির পেশাদার প্রতারক চক্র। সম্প্রতি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ও ই-কমার্স ব্যবসার মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে দেশ জুড়ে সমালোচিত হয়েছে ই-কমার্স ব্যবসা। এমএলএম এবং ই-কমার্স ব্যবসা নিয়ে যখন সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা ও তর্ক-বিতর্ক চলছে, সাধারণ মানুষ যখন অনলাইন প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অসহায় ও বিব্রত ঠিক এ মুহূর্তে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পল্টন এলাকা থেকে সুইসড্রাম কোম্পানির অন্যতম পরিচালক কাজী আল-আমিনসহ মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, এ প্রতারক চক্রটি সুইসড্রাম কোম্পানির নামে একটি ওষুধ (সর্ব রোগের মহৌষধ) যা ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও হার্টের ওষুধ বলে প্রচারণা চালিয়ে আসছিল। এমনকি এ ওষুধ করোনা প্রটেক্টিভ হিসেবে কাজ করে বলেও প্রচার করে এ কোম্পানিটি।
কোম্পানিতে নতুন সদস্যদের পাঁচটি ক্যাটাগরির মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করা হতো। ১ ও ২ ক্যাটাগরিতে ৪ হাজার ২০০ থেকে ৬ হাজার ২০০ টাকার বিনিময়ে এক প্যাকেট ওষুধ ও ৩, ৪ নম্বর ক্যাটাগরিতে ২৬ হাজার ২০০ থেকে ৫৮ হাজার টাকার বিনিময়ে ৬ থেকে ১৪ প্যাকেট ওষুধ এবং ৫ নম্বর ক্যাটাগরিতে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকার বিনিময়ে ২৮ প্যাকেট ভুয়া ওষুধ দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল সুইসড্রাম কোম্পানি। যদিও প্রতিষ্ঠানটি নির্দিষ্ট কোনো সাইনবোর্ড ও ঠিকানা নেই।
গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাব-৪- এর সিও মোজাম্মেল।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত