রাজধানীর ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের সেবার উদ্দেশ্যে গঠিত অলাভজনক ও অরাজনৈতিক সংগঠন ‘ধানমন্ডি সোসাইটি’ এর কার্যনির্বাহী কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ধানমন্ডির একটি রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ধানমন্ডি সোসাইটির সভাপতি আবু মুহাম্মদ সবুর ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মোসাদ্দেক হাবিব (মিতু) সহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সংগঠনের সভাপতি আবু মুহাম্মদ সবুর বলেন, কথায় আছে, যদি ঢাকাকে বাংলাদেশের রাজধানী বলা হয়, তবে ধানমন্ডি হলো ঢাকার রাজধানী। ক্রীড়া-শিক্ষা-সংস্কৃতি, আর্থ-সমাজনীতি কিংবা রাজনীতি যা-ই বলি, ঐতিহ্যবাহী ধানমন্ডি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইতিহাসেরও অংশ। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ক্রমাগত বাণিজ্যিক আগ্রাসন, পরিবেশ দূষণ ও সামাজিক বিশৃঙ্খলায় ঐতিহ্যবাহী ধানমন্ডি আজ তার আবাসিক মর্যাদাটুকু প্রায় হারাতে চলেছে। এমতাবস্থায় একজন সচেতন ধানমন্ডিবাসী হিসেবে নীরব থেকে সামাজিক দায়িত্ববোধ এড়িয়ে যেতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, ধানমন্ডির হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সবার আগে প্রয়োজন সকল বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা। আর আলোচনার জন্য একটি অরাজনৈতিক সামাজিক ফোরাম তৈরি করা, কমিটি গঠনের মাধ্যমে। সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এবং স্বেচ্ছাসেবী উপকমিটি গঠনের মাধ্যমে সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করা। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে, সেই উদ্দেশ্য আদর্শকে সামনে রেখেই- ধানমন্ডির স্থানীয় সমাজসচেতন গণ্যমান্য সুযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে অবশেষে আমরা ধানমন্ডি সোসাইটি গড়ে তুলতে সফল হয়েছি। এখন লেক, পার্ক এবং খেলার মাঠের উন্নয়ন, সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনে বৃক্ষরোপন পরিচর্যা সংরক্ষণ ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে স্থানীয় অধিবাসীদের বিভিন্ন সুযোগে নিশ্চিত করা হবে। এছাড়াও নিয়মিত সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি এলাকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন ও ফুড ব্যাংক গঠন করা হবে।
সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মোসাদ্দেক হাবিব বলেন, এই সোসাইটির মাধ্যমে সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং জীবন ও জীবনযাত্রার নিরাপত্তা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে সামাজিক শৃঙ্খলা এবং সার্বিক কল্যাণে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা ও বিভিন্ন ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ধানমন্ডির সড়ক উপসড়কে যানজট নিরসন, দুর্ঘটনারোধ ও পথচারীদের নির্বিঘ্ন চলাচলে অবৈধ্য ভ্রাম্যমাণ দোকান, ফুটপাথ অবমুক্তকরণে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা এবং উপসড়কে রোডসাইন ব্যবহার করে একমুখী চলাচল নিশ্চিত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ইলেক্ট্রনিক্স নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বলিত নিরাপত্তাকর্মীর মাধ্যমে এলাকার প্রবেশ এবং প্রস্থানমুখের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে এলাকায় নিয়মিত বর্জ্য নিরসন, রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও সুনিশ্চিত করার বিষয়টিও দেখা হবে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব জনকাল্যাণমূলক কাজে স্থানীয় সাংসদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং স্থানীয় কাউন্সিলর ধানমন্ডি সোসাইটিকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করবেন জানিয়েছেন।
ধানমন্ডি সোসাইটির কার্যনির্বাহী কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. লিয়াকত হোসাইন (মিলন) ও মো. মনির হোসাইন, যুগ্ম সম্পাদক এ কামাল অনু, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল খান (অলক), অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ সাদ উল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক মো. শরিফুল হক, নারী বিষয়ক সম্পাদক দিলারা হাফিজ, জনকল্যাণ সম্পাদক এ. এম. কামাল, শিক্ষা ও আইন বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ অনীক রুশদ হক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সৈয়দ আশেক আলী জিতু, কমিউনিটি স্বাস্থ্য সম্পাদক হোসাইন এ সিকদার, কমিউনিটি পরিবেশ সম্পাদক মো. তারেক রহমান, ক্রীড়া সম্পাদক মো. তৈয়ব আফজাল, গণমাধ্যম ও যোগাযোগ সম্পাদক মো. ইসাম, জনসংযোগ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান, সদস্য ডা. মেহরাজ রহমান চৌধুরী এবং খান মো. ওসামা সালেহিন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন
