বিশেষ অভিযানে নকল স্বর্ণের বার, নকল ম্যাগনেটিক পিলার ও কয়েন এবং ভুয়া কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ধারী প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ। এসময় নকল ৪টি স্বর্ণের বার, সোনার বার তৈরির মেশিন, তামার তার, তার গলানোর ক্যামিক্যাল, হিউম্যান রাইটসের নকল আইডি কার্ড এবং সিভিল এভিয়েশনের নকল আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।
প্রতারক চক্রের সদস্যরা একেক জন একেক চরিত্রে অভিনয় করতো। ম্যাগনেটিক পিলার, কয়েন ও সোনারবার সরবরাহ করার কথা বলে সুকৌশলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এ প্রতারক চক্র।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টোরোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ডিবি দক্ষিণ) সঞ্জিত কুমার রায়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- বশার মোল্লা, শেখ সোহাগ হোসেন মিন্টু, দ্বীন মোহাম্মদ, জুয়েল শিকদার, কথিত ড. মোজাম্মেল খান ওরফে আকাশ, শেখ আলী আকবর, জামাল ফারাজী, সোহেল শিকদার, বিল্লাল হোসেন ও শাহরিয়ার ইকবাল।
ব্রিফিংয়ে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন এন্ড ডিবি দক্ষিণ) সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, ভাটারা থানার একটি প্রতারণা মামলার তদন্তে একজন মহিলা ভিকটিমের সন্ধান পাওয়া যায়। যিনি গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে সমুদয় টাকা প্রতারকদের হাতে তুলে দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ভাটারা থানা এই মামলাসহ বিমানবন্দর থানার অপর একটি প্রতারণার মামলা তদন্তকালে এজাহারনামীয় আসামি ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত বশার মোল্লা নিজেকে কাস্টমস ডাইরেক্টরের এপিএস হিসেবে পরিচয় দিয়ে কম দামে স্বর্ণের বার ক্রয় করে দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করে। গ্রেফতারকৃত শেখ সোহাগ হোসেন মিন্টু নিজেকে কাস্টমস ডাইরেক্টর এ্যাডমিন হিসাবে ক্রেতার সাথে দেখা করে বিশ্বস্ততা অর্জন করে। গ্রেফতারকৃত দ্বীন মোহাম্মদ ও জুয়েল শিকদার স্বর্ণকার হিসাবে নকল সোনারবার তৈরি করে।
গ্রেফতারকৃত কথিত ড. মোজাম্মেল খান ওরফে আকাশ নিজেকে কেমিস্ট ও পরমাণু বিশেষজ্ঞ পরিচয় দেয়। গ্রেফতারকৃত শেখ আলী আকবর নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর হিসাবে পরিচয় দেয়। গ্রেফতারকৃত জামাল ফারাজী, সোহেল শিকদার, বিল্লাল হোসেন এবং শাহরিয়ার ইকবাল ক্রেতা যোগাড় করে কথিত পরমাণু বিজ্ঞানীর কাছে নিয়ে যেতো। পরবর্তীতে তারা ম্যাগনেটিক পিলার, কয়েন ও সোনারবার পরীক্ষা করে সঠিক আছে মর্মে ভুয়া রির্পোট দিতো।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানা, দক্ষিণখান থানা, উত্তরা-পূর্ব থানা, কাশিমপুর থানা ও বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানায় একাধিক মামলা রয়েছে মর্মে জানান গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা।
কেউ যদি কখনো সোনার বার, ম্যাগনেটিক পিলার কিংবা মূল্যবান কয়েন বিক্রির প্রস্তাব দেয় তাহলে সে প্রস্তাবে রাজি না হয়ে গোয়েন্দা পুলিশকে অবগত করার আহ্বান জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, পিপিএম এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার তরিকুর রহমানের তত্ত্বাবধানে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়িচুরি প্রতিরোধ টিমের পুলিশ পরিদর্শক(নিরস্ত্র) আরজুনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত