রংপুরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে গলদা চিংড়ি চাষ হোঁচট খাচ্ছে। গলদা চিংড়ি নোনা পানির মাছ এ ধারণা পাল্টে দিয়ে রংপুর বিভাগের চারটি সরকারি খামারে উৎপাদন শুরু হয় এই মাছের পোনার। বিগত বছরে পোনা থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকার মাছ পাওয়া গেলেও এবার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় যেতে পারেনি। তাপমাত্রা বেশি থাকায় মাছের উৎপাদন অনেকটা কমে গেছে।
রংপুর বিভাগীয় মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ি, দিনাজপুরের পার্বতীপুর-বীরগঞ্জ উপজেলা ও কুড়িগ্রাম সদরে গলদা চিংড়ির পোনা উৎপাদনে খামার রয়েছে। স্থানীয় চাষিরা খামার থেকে পোনা নিয়ে নিজস্ব পুকুরে চাষ করে বাজারে বিক্রি করেন।
গত ২০২০-২১ বছরে চারটি খামারে ১০ লাখ ১৪ হাজার গলদা চিংড়ির পোনা উৎপাদন হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে চাষিরা ছোট সাইজের প্রতি পিস পোনা প্রায় ২ টাকা এবং বড় সাইজের পোনা প্রায় ৬ টাকা দরে ক্রয় করছেন খামার থেকে। লোনাপানি ও স্বাদুপানি সাথে খাপ খাইয়ে লার্ভা উৎপাদন করা হয়। দক্ষিণাঞ্চল থেকে গলদা চিংড়ির মা মাছ এনে লার্ভা সংগ্রহ করে ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে পোনা (পিএল) উৎপাদন করে চাষি পর্যায়ে দেয়া হয়।
তবে চলতি বছরের মার্চ মাসে রংপুর অঞ্চলের তাপমাত্র ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর থাকায় গলদা চিংড়ি চাষ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি। মৎস্য বিভাগ এ জন্য আবহাওয়াকেই দায়ী করেছেন। গলদা চিংড়ি সাধারণ ১০/ ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভালো উৎপাদন হয়। মার্চে এর উৎপাদন শুরু হয়। এবার মার্চ মাসে রংপুর অঞ্চলের তাপমাত্রা ছিল ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর ছিল। তাই মাছে উৎপাদন অনেক কম হয়েছে।
মৎস্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক সময় মনে করা হতো গলদা চিংড়ি শুধু নোনা পানির মাছ। কিন্তু সে ধারণা পাল্টে দিয়ে মৎস্য বিভাগ রংপুর বিভাগে এই মাছ উৎপাদন করলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই মাচ চাষ ব্যাহত হয়েছে।
রংপুর বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, রংপুর অঞ্চলে গলদা চিংড়ি চাষের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। বিভাগের ৪টি খামারে উৎপাদিত ছোট ও বড় সাইজের পোনা মৎস্যচাষিরা নিয়ে নিজেদের পুকুরে চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। তবে এবার তাপমাত্রা বেশি থাকায় উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এআই