৮ মে, ২০২৩ ১১:২৩

বন্ধুকে টাকা ধার দেওয়াই কাল হলো তেজগাঁও কলেজ শিক্ষার্থী ইকরামের!

অনলাইন প্রতিবেদক

বন্ধুকে টাকা ধার দেওয়াই কাল হলো তেজগাঁও কলেজ শিক্ষার্থী ইকরামের!

শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন মোল্লা। ছবি: সংগৃহীত

ব্যবসা করে লাভ দেয়ার কথা বলে তেজগাঁও কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন মোল্লার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার নেন তার বন্ধু শান্ত। বিনিময়ে প্রতি মাসে তাকে লাভ বা হাত খরচের টাকা দেয়ার কথা থাকলেও কোনো কিছু পাননি ইকরাম। উল্টো নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ইকরাম।

পুলিশ বলছে, রমজান মাসে লাভসহ টাকা ফেরত দেয়ার সময় টাকা কম দেখে তা নেননি ইকরাম। এ নিয়ে শান্তর সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। এর জেরেই বাসা থেকে ডেকে নিয়ে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার বালুর মাঠে গলা কেটে এবং হাতুড়ি দিয়ে মাথা থেঁতলে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ইকরামকে।

ইকরামের চোখও তুলে ফেলা হয়েছিল। হত্যার পর মরদেহ ডোবায় ফেলে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছিল। মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর কথা জানিয়েছে পুলিশ।

ইকরামের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার (৫ মে) তার দুই বন্ধু শান্ত (২৩) ও সিদ্দিককে (২৩) থানায় নিয়ে আসা হয়। তদন্ত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন তারা। পরে দায়েরকৃত হত্যা মামলায় দুই জনকে আসামি করে আদালতে পাঠানো হয়। এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন শান্ত। আর আদালতের আদেশে দুই দিনের রিমান্ডে রয়েছেন সিদ্দিক।

নিহত ইকরামের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার (৪ মে) খিলক্ষেতের বাসা থেকে তাকে ডেকে নিয়ে যান শান্ত। এরপর থেকেই কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি ইকরামের। ঘটনার পরদিন শুক্রবার (৫ মে) খিলক্ষেত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন পরিবারের সদস্যরা। তখন এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করে খিলক্ষেত থানা পুলিশ। শনিবার (৬ মে) দুপুরে খিলক্ষেতের বালুর মাঠের একটি ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয় ইকরামের গলাকাটা মরদেহ।

নিহত ইকরামের বাবা কবির হোসেন জানান, শান্ত ও সিদ্দিক মিলে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।

ডিএমপি গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, তেজগাঁও কলেজের এক শিক্ষার্থী নিখোঁজের পর তার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি দ্রুত সময়ের মধ্যে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা এ হত্যাকাণ্ড সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু তথ্য জানতে পেরেছি। এসব বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার পেছনে আর কারা জড়িত, আর কোনও বিষয় রয়েছে কিনা, এসব বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।

খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহান হক বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আরও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সেসব বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর