নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ইকবাল হোসেনকে দলীয় পদ দিয়ে পুরস্কৃত করেছে বিএনপি। তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করে গত ৪ মে কমিটি ঘোষণা করেছে জেলা বিএনপি। সারাদেশসহ বিশ্বব্যাপী সমালোচিত নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পার হয়েছে গত ২৭ এপ্রিল।
ইকবাল শুধু সাত খুন নয় জেলা বিএনপির বর্তমান প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে হত্যাচেষ্টা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। ইকবালসহ আরো দু’জনের পরিকল্পনা ও অর্থায়নে গত বছরের ২৫ এপ্রিল ঢাকার পল্টনে অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে হত্যার উদ্দেশে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করা হয়। তিনি অবশ্য প্রাণে বেঁচে গেছেন।
এদিকে, ইকবাল হোসেনকে এ পদ দেওয়ায় স্থানীয় বিএনপিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী ও জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে যে এমন জঘণ্য অপরাধের সাথে যার নাম জড়িয়ে আছে তাকে দিয়ে বিএনপি কী অর্জন করতে চায়?
ঠিক এরকমই আরেকটি কাণ্ডে বিব্রত ঢাকা দক্ষিণের ৬০নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। গত ১ মে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের ৬০ নং ওয়ার্ড কদমতলী থানা যুবদলের কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় আসিফ মামুনকে। আসিফ মামুনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করায় ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় বিএনপি। বিএনপি কর্মীদের অভিযোগ মামুন কখনো দলীয় কর্মী ছিলেন না। বরং তাকে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে বলা যায়। তারা অভিযোগ করে বলেন, গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীর হয়ে অত্র ওয়ার্ড এবং থানায় প্রচারণা চালিয়েছেন মামুন। এমনকি সেসব প্রচরণার ভিডিও ফুটেজও তাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
এদিকে, মামুনের এ দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই আওয়ামী লীগের হয়ে প্রচারণার সেসব ভিডিও বিএনপির বিভিন্ন ফেসবুক পেইজে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এছাড়া মামুনের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্ট অভিযোগও করেছেন এলাকাবাসী।
অন্যদিকে, গত ৩ মে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের ৬৭ নং ওয়ার্ড ডেমরা থানা যুবদলের কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় মো. সাঈদকে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং লিডার। এ অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। এমন একজন ব্যক্তিকে যুবদলের আহ্বায়ক করায় সেখানেও প্রশ্ন উঠেছে।
জানতে চাইলে ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রহমান বলেন, ‘মো. সাঈদ এলাকায় চিহ্নিত কিশোর গ্যাং লিডার। থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে।’
উল্লেখ্য, এসব এলাকার কমিটি বাছাইয়ে সুপারিশের দায়িত্বে ছিলেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক টিম লিডার-৯ আলমগীর কবীর।